সরকার ইঙ্গিত দিল হস্তক্ষেপের, চিঠি পাঠাল অ্যাপ-ক্যাব কর্তৃপক্ষকে। ছবি: সংগৃহীত।
অভিযোগটা অনেক দিন ধরেই উঠছিল। অথচ এক লাগামহীন, নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতিতে ক্রমাগত মাত্রা ছাড়াচ্ছিল অভিযোগ, তীব্র হচ্ছিল তার আকার। সাধারণ, নিতান্ত সাধারণ এক মানুষের অসহায়তার ক্রমাগত সুযোগ নিতে দেখছিলাম আমরা, অসাধু, যুক্তিহীন কিছু কারণে। ওলা, উব্রের মতো অ্যাপ-ক্যাবের খামখেয়ালি যথেচ্ছাচার এবং নিংড়ে-নেওয়া মানসিকতার সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ ছাড়া উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না সাধারণ মানুষ। যে কোনও সময়ে, যে কোনও পরিস্থিতিতে, বিশেষত দুর্বিপাক-মুহূর্তে অ্যাপ-ক্যাবের বেলাগাম ভাড়া হতাশ ও ক্রুদ্ধ করছিল সমাজকে, নিষ্ফলা জেনেই। এ হেন পরিস্থিতিতে সরকার ইঙ্গিত দিল হস্তক্ষেপের, চিঠি পাঠাল অ্যাপ-ক্যাব কর্তৃপক্ষকে। এই বার্তা আর্ত মানুষের কাছে স্বস্তিদায়ক, এ নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই।
খেয়াল রাখতে হবে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে সরকারের হস্তক্ষেপ লাগাম পড়িয়েছে অ্যাপ ক্যাবের যথেচ্ছাচারে। প্রশ্ন উঠতে পারে বেসরকারি ক্ষেত্রে সরকারের এই নিয়ন্ত্রণ আদৌ কাঙ্খিত কি না? বাজার অর্থনীতির প্রাথমিক পাঠ বলে, সরকারের দূরে থাকা উচিত এই ধরনের ক্ষেত্রে। কিন্তু সরকারের ভাবনার মূলে যদি থাকে মানুষ, যার সুখ-দুঃখ হওয়া উচিত প্রধান বিবেচ্য, তা হলে সেই মানুষের ভাল-মন্দের দায়ও অনেকটা বর্তে যায় সরকারের উপরেই।
এই পরিস্থিতিতেই বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করতে হয় সরকারকে, করার দরকার পড়ে অতএব অ্যাপ ক্যাবের ক্ষেত্রেও। বেসরকারি বাস, মিনিবাসে ভাড়া নিয়ন্ত্রণে যদি সরকারের ভূমিকা থেকে থাকে তা হলে অ্যাপ-ক্যাব ব্যতিক্রমী সুবিধার অধিকারী হবে কেন? অতএব সরকারের এই নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ স্বাগত। শুধু এটাই দেখার কিছু চিঠিপত্রের আলাপ, কিছু ধমকধামক এবং কিছু হুমকির মধ্যেই যেন এই প্রক্রিয়া শেষ না হয়ে যায়। বৃষ্টিপ্লাবিত এক শেষ সন্ধ্যায় অসহায় এক মানুষের চরম দুর্দশার সুযোগ নিয়ে বিপুল ভাড়া হাঁকিয়ে কেউ যেন অন্যায় করার সুযোগ না পায়। সরকার যদি এটা নিশ্চিত করতে পারেন তা হলে সাধুবাদ প্রাপ্য হতে পারে তাঁদের জন্য। আর না হলে আরও পাঁচটা ঢক্কানিনাদের মতো এ-ও পর্বতের মুষিক প্রসবের পুরনো কাহিনি।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
আরও পড়ুন
ঝোপ বুঝে অ্যাপ-ক্যাবের কোপ! ঠেকাতে কঠোর হচ্ছে সরকার