State news

শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা আজ অত্যন্ত জরুরি

এই দুই বিষয়ের কোনওটির সঙ্গেই যাঁরা যুক্ত নন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উঠোনে তাঁদের কোনও কাজ নেই বলেই ধরে নেওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাঁদের গতিবিধির উপর বিধিনিষেধও আরোপিত হতেই পারে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৫:৩৭
Share:

ফাইল চিত্র।

বাইরের এই নেপন-চোপনটা দেখলেই বোঝা যায় ভিতরে খড়ের গাদন ঠিক কতখানি। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর অধ্যয়নের জন্য, অধ্যাপনার জন্য। এই দুই বিষয়ের কোনওটির সঙ্গেই যাঁরা যুক্ত নন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উঠোনে তাঁদের কোনও কাজ নেই বলেই ধরে নেওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাঁদের গতিবিধির উপর বিধিনিষেধও আরোপিত হতেই পারে। বার বার যখন উত্তপ্ত হচ্ছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর এবং বার বার যখন বহিরাগতদের দিকেই আঙুল উঠছে, তখন বহিরাগতদের আনাগোনায় রাশ তো টানতেই হবে। কিন্তু তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষকর্তাদের নেমে আসতে হবে কলেজ স্ট্রিটের কিনারে! মূল প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে পরিচয়পত্র পরীক্ষা করতে হবে খোদ রেজিস্ট্রারকে! এর থেকেই কি বোঝা যায় না, শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঠিক কতটা অবনতি হয়েছে?

Advertisement

দৃষ্টান্তটা তৈরি হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে। কিন্তু সমস্যা শুধু ওই প্রতিষ্ঠানে সীমাবদ্ধ নয়। গোটা রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনেই নৈরাজ্যের ছায়াপাত আজ। নিত্য অশান্তির খবর আসে। কোথাও শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সে অশান্তির উৎস। কোথাও সঙ্ঘাত শাসক আর বিরোধী ছাত্র সংগঠনের মধ্যে। ছাত্র রাজনীতিকে ঘিরে অশান্তি এ রাজ্যে কোনও নতুন বিষয় নয়। কিন্তু অশান্তির ধরন এবং তার প্রাবল্যের ছবিটা নতুন। সঙ্ঘাত আর শুধু ছোটখাটো সংঘর্ষে সীমাবদ্ধ থাকে না। রক্তপাত হয়, গোটা ক্যাম্পাস অচল হয়, কর্তৃপক্ষকেও বার বারই অপরিসীম হেনস্থা এবং অসম্মানের সম্মুখীন হতে হয়। গোটা পরিবেশটাই বিষিয়ে ওঠে যেন।

রাজ্যের প্রশাসন এ বিষয়ে উদাসীন, এমন অভিযোগ করা যাচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী নিরন্তর এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় সক্রিয়। বার বার শিক্ষাঙ্গনে অশান্তির বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন তিনি। নিজের দলের ছাত্র সংগঠনকেও একাধিক বার তিনি সতর্ক করছেন। সেখানেই শেষ নয়, শিক্ষাঙ্গনে বহিরাগতদের দাপটের বিরুদ্ধে কঠোরতর বার্তা দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। তা সত্ত্বেও নিভছে না অশান্তির আগুন। কিছুতেই রাশ টানা যাচ্ছে না কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের দাপাদাপির উপর। খোদ রেজিস্ট্রারকে নেমে আসতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশপথে। সহস্তে পরীক্ষা করে দেখতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পা রাখা প্রত্যেক ব্যক্তির পরিচয়পত্র।

Advertisement

শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা আজ অত্যন্ত জরুরি। তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষকর্তা সক্রিয় হলেন, সেও প্রশংসনীয়। কিন্তু শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ কোথায় পৌঁছলে একজন রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে হয়, সে প্রশ্ন তো উঠবেই। শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশাসনিক প্রতিশ্রুতিগুলো কতটা অসারগর্ভ, এর পরে তা নিয়ে আর সংশয় থাকে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন