Anjan Bandyopadhyay

লক্ষ্মণরেখা থাকুক, সীতার কান্নাও বুঝছি তো?

অ্যাটর্নি জেনারেল লক্ষ্মণরেখার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতিকে। প্রধান বিচারপতি তোপ দেগেছেন সরকারের বিরুদ্ধে। সরকার বিচারবিভাগীয় এ বক্তব্যকে কার্যত নস্যাত্ করেছে। এক অদ্ভুত ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই দেশের জ্বলন্ত এক সমস্যা।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০০
Share:

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর। ছবি সংগৃগীত।

অ্যাটর্নি জেনারেল লক্ষ্মণরেখার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতিকে। প্রধান বিচারপতি তোপ দেগেছেন সরকারের বিরুদ্ধে। সরকার বিচারবিভাগীয় এ বক্তব্যকে কার্যত নস্যাত্ করেছে। এক অদ্ভুত ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই দেশের জ্বলন্ত এক সমস্যা।

Advertisement

আদালতগুলোতে মামলার নিষ্পত্তির হার যে ঠিক কী রকম অথবা একটা মামলা মানে যে আসলে ‘তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ’ সেটা বুঝতে রকেট বিজ্ঞানী হওয়ার যে দরকার নেই এ কথা বোধহয় আপামর ভারতবাসী উপলব্ধি করেন। বিচারের বাণী যে শুধু নীরবে নিভৃতিতেই নয়, বিলম্বেও কাঁদে— এ সত্য এখন দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার। সমস্যাটা যে আদৌ রয়েছে, থাকলেও তার সুরাহা দরকার এবং সে জন্য তার কারণটা জানার প্রয়োজন রয়েছে, এ কথা বুঝতেই স্বাধীনতার পর কয়েকটা দশক কাটিয়ে দিয়েছি আমরা। এর পরেও এ দেশের প্রধান বিচারপতিকে বিচারকের অভাবের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে যখন প্রধানমন্ত্রীর সামনে কেঁদে ফেলতে হয়, তখন তা হয় নিতান্তই দুর্ভাগ্যের। দুর্ভাগ্যের মাত্রা আরও তীব্র হয় যখন, তাতেও কোনও কাজ হয় না এবং একই প্রধান বিচারপতিকে আবারও বলতে হয় সরকারের বিরুদ্ধে, এ বার তোপ দেগে।

এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই, আমাদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সংবিধান প্রণেতারা যথাযথ ভাবেই দেশ শাসনের বিভাগগুলোর মধ্যে লক্ষ্মণরেখা টেনে দিয়েছিলেন। লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম কাঙ্খিত নয় কোনও অবস্থাতেই। কিন্তু অসংখ্য মানুষের দুর্দশার সঙ্গে জড়িত যে সমস্যা, তার মূলে টান দিতে গেলে, তা দূর করার চেষ্টা করলে যদি অন্য প্রান্তে টান পড়ে তবে সেখানেও দ্বিতীয় বার ভাবার দরকার পড়ে।

Advertisement

প্রধান বিচারপতি কি সত্যিই লক্ষ্মণরেখা পার করলেন? নাকি একটা সমস্যার দিকে আরও এক বার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন মাত্র? সরকারের যদি কিছু করণীয় থাকে সেটা করাটাই এই মুহূর্তের একমাত্র বাঞ্ছনীয় পদক্ষেপ। লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম হল অথবা হল না, এ বিতর্ক তোলা থাকুক শিকেয়।

না হলে লক্ষ্মণরেখার নামে সীতা বন্দিনী হয়ে গেলেন কি না সেটাও হয়তো বুঝে উঠতে পারব না আমরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন