মাসুদ আজহার। —ফাইল চিত্র।
বুধবার মাসুদ আজহারকে কেন্দ্র করে ভারত কি কোনও ইতিবাচক সাড়া পাবে চিনের কাছে? আন্তর্জাতিক আকাশে ভারতের দীর্ঘ দিনের প্রয়াস কি সাফল্যের রূপ দেখবে? চিন কি মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী বলে শেষ পর্যন্ত মেনে নেবে? আপাতত সম্ভাবনা ও না-সম্ভাবনার চোলাচলে ভারত তো বটেই, এই উপমহাদেশও এবং সর্বোপরি সন্ত্রাসের প্রশ্নে উদ্বিগ্ন ও বিপন্ন গোটা আন্তর্জাতিক দুনিয়া।
ইতিহাস জানে, এর আগে বারংবার মাসুদ আজহারের প্রশ্নে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারত-সহ বিশ্বের প্রধান দেশগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস বার বার আটকে দিয়েছে চিন। শুধু তা-ই নয়, সন্ত্রাসের প্রশ্নে পাকিস্তানকে যখন ভারত বিভিন্ন সময়ে প্রায় একঘরে করে এনেছে, ঠিক তখনই আমাদের পশ্চিমের প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ‘বেল আউট’ করে নিয়ে গিয়েছে চিন। এই উপমহাদেশে শক্তির ভারসাম্যের খেলায় চিন ভারতকে প্রতিদ্বন্দ্বীর দৃষ্টিতেই দেখেছে, ফলে পাল্টা ঘুঁটি সাজিয়েছে তারা কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক ডানায় ভর দিয়ে, এবং সেখানে পাকিস্তানকে বন্ধু হিসাবেই গ্রহণ করেছে তারা। বলাই বাহুল্য, পাকিস্তানের কাছে সেটা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে এ যাবৎ।
এই পরিস্থিতিতে চিন শেষ পর্যন্ত কতটা কী করবে, রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে পাকিস্তান তথা মাসুদ আজহারের মাথার উপরে আশীর্বাদের হাত সরে যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ের এখনও যথেষ্টই কারণ রয়েছে। ইতিবাচক যেটা, তা হল এই প্রশ্নে চিন এ যাবৎকালের অনড় অবস্থান থেকে সরে অপেক্ষাকৃত নমনীয় কূ়টনৈতিক অবস্থান দেখাচ্ছে। আমেরিকা তো বটেই ব্রিটেন ও ফ্রান্সের চাপ এর পিছনে কাজ করছে বলে কূ়টনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা। সন্ত্রাসের প্রশ্নে আমেরিকা-ব্রিটেন–ফ্রান্স সরাসরি এখন যে ভাবে আওয়াজ তুলছে, যে ভাবে আন্তর্জাতিক দুনিয়া সন্ত্রাসবাদের করাল থাবাকে ক্রমাগত প্রত্যক্ষ ভাবে দেখতে পাচ্ছে, তাতে একটা চাপ ঘনীভূত হয় বইকি। এর পরেও বলতে হবে এই ক্রমঘনায়মান চাপকে কূ়টনৈতিক ভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে ভারত। বহু দশক ধরেই পাকিস্তানকে নিয়ে ভারতের যে সব অভিযোগ কূটনৈতিক দুনিয়ায় ছিল, সন্ত্রাস কবলিত বিশ্ব ঘিরে এ বার তার মর্মার্থ স্পর্শ করতে পারছে বোধহয়। সফল কূটনীতির পথ ধরে ভারত তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়েছে ক্রমাগত। চিনের সাম্প্রতিক এই নমনীয় অবস্থান তারই প্রতিফলন।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরও পড়ুন: মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘোষণায় সদর্থক অগ্রগতি, চিনের ঘোষণায় আশায় ভারত
ভারত এখন তাকিয়ে থাকবে চিন-সহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ইতিবাচক সাড়ার দিকেই।