কাজ ও অকাজ
এনআরইজিএ বা ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তার প্রেক্ষিতে কিছু অভিজ্ঞতা জানাতে চাই। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একটি ব্লকের ওয়াকিবহাল এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলাম। তাঁর মতে, এই প্রকল্প গ্রামীণ তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে এক ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। কয়েক বছর আগেও গ্রামের এক জন দিনমজুরের সৎ ভাবে পরিশ্রম করে আয় করার যে মানসিকতা ছিল বর্তমানে সেটা শেষ হয়ে গেছে। এই প্রকল্প চালু হওয়ার প্রথম দু-এক বছর যে কাজ এক জন মজুরের কাছে পাওয়া যেত সেটা এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। পরিমাপ অনুযায়ী যা মাটি কাটার কথা তার ৩০ শতাংশেরও কম পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু মাস্টার রোলে পুরো টাকাই তুলে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ভুয়ো মাস্টার রোল তো আছেই। গ্রামের রাজনীতির সঙ্গে গাঁটছড়ায় এ ভাবে জনগণের করের থেকে বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়ে যাচ্ছে। ফুলে-ফেঁপে উঠছে গ্রামের এক শ্রেণির লোক। একটু চোখ-কান খোলা রাখলেই যেটা নজরে পড়বে।
সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন গ্রামের সেই সব মানুষ যাঁদের কয়েক বিঘা চাষের জমি আছে। চাষের কাজ করতে মজুর পাওয়াই দুষ্কর। কোনও ক্রমে পাওয়া গেলেও দু’গুণ তিন গুণ মজুরি দিতে হচ্ছে। ফলে, চাষের খরচ বেড়ে যাচ্ছে বিস্তর। ২০০৫ সালেও ১২ টাকা কিলো দরে যে চাল পাওয়া যেত তা এখন তিন গুণ হয়ে গেছে। টাকার অঙ্কে আয়টাই শুধু বেড়েছে। টাকার প্রকৃত মূল্য কমে গেছে। এ বিষচক্র থেকে মুক্তি কোথায়?
নির্মলকুমার রায়। বাটানগর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা