বিদ্রুপ কেন
‘বেঁচে থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর’ (২-১১) পড়ে ধর্মসঙ্কটে পড়লাম। কিছু কথা বলা দরকার। ‘শৈশবে ক্যানসার নিধনের উপদেশ শুনলে মনে হয় আমরা কি কংসরাজের বংশধর হয়ে গেলাম’ মানে কী? প্রাথমিক অবস্থায় রোগের বা তার সম্ভাবনার চিকিৎসা শিশু হত্যা-সম অপরাধ?
তবে বার্ধক্য নিষিদ্ধ হোক, কথাটা স্বাগত। বার্ধ্যক্য বছর গোনে না, অপুষ্ট, অযত্নলালিত শরীরে আগে আসে, তাই আমাদের দেশে ক্যানসারও হয় অপেক্ষাকৃত কম বয়সে। সে বার্ধক্য দূরে ঠেলতে পারলে তো ভালই। বিশেষত যখন ক্যানসার, ডায়বিটিস, হার্টের আর কিডনির অসুখ আধুনিক এই চারটি মারণ অসুখের হার ও বৃদ্ধি এর সঙ্গে জড়িত। চিকিৎসকরা চিরকালই সাবধান করেন, সব সময়ে বিপদ হয় না জেনেই। তাকে স্বাস্থ্য সন্ত্রাস বা স্বাস্থ্য পুলিশ বলে বিদ্রুপের হেতু?
ক্যানসার একটা অসুখ নয়। আর সবার সব ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকিও সমান নয়। কারও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি, কারও অন্ত্রের। ক্যানসার নিয়ে প্রচার দু’স্তরে কাজ করে। এক নানা ভুল ধারণা ভাঙা। দুই, প্রত্যেককে নিজের ঝুঁকি কোন দিক থেকে কতটা তা বুঝতে এবং কমাতে সাহায্য করা। অবশ্যই সবাইকে সাহায্য করা যায় না। তা বলে কাউকে করা হবে না? ধারণা ভুল স্ক্রিনিং সম্বন্ধেও। কোনও ব্যক্তিবিশেষের ‘সারা শরীরে চিরুনি তল্লাশি’ নয়, স্ক্রিনিং মানে বিশেষ কোনও জনগোষ্ঠীর সবাইকে কোনও বিশেষ ক্যানসারের জন্য পরীক্ষা করা, যখন তাতে মৃত্যুর হার যথেষ্ট কমবার প্রমাণ থাকে। স্ক্রিনিং নিয়ে তর্ক আছে, তবে এ দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এখনও জনভিত্তিক স্ক্রিনিং চালু হয়নি, তার প্রাসঙ্গিকতাও নেই।
কিছু ভুল (পেরুতে কলেরার কারণ ও মৃত মানুষের সংখ্যা) ও অকিঞ্চিৎকর (মেয়েদের ওয়াইন ও ডিম খাবার হিসাব) তথ্য দিয়ে জীবন শৈলী নিয়ে নাটকীয় শ্লেষোক্তি, কিন্তু আমাদের দেশের সমস্যার সঙ্গে তার যোগ কী? ক’জন মহিলা নিয়মিত ওয়াইন খান আমাদের দেশে? সত্যি এবং সত্যি এটাই যে আমাদের দেশে যে ধরনের ক্যানসার বেশি হয় তার বেশ কিছু প্রতিরোধযোগ্য। কিছুর সহজে নির্ণয়যোগ্য ক্যানসারের প্রাথমিক অবস্থা আছে এবং শুরুতে চিকিৎসা করলে ভাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সময়ে চিকিৎসার অভাবে এ দেশে ক্যানসারে মৃত্যুর হার খুব বেশি। সমাজ এঁদের পাশে দাঁড়াবে, না অনর্থক চিকিৎসায় পয়সা নষ্ট না-করার কাণ্ডজ্ঞানের জন্য অভিনন্দন জানাবে?
আর জনগণ তো পরিবর্তনশীল সমষ্টি। নিয়তই নতুন শিক্ষা নেয়। পাকাপাকি ভাবে তাদের কাণ্ডজ্ঞান মাপার দুঃসাধ্য কাজটি কে করল? কোথায় বা দেখা গেল ‘ক্ষুব্ধ বিস্রস্ত জনসেবকদের’, যাঁরা বলবেন, ‘শুনছ না যে, ধরব নাকি?’ রোগ প্রতিরোধে অসাধুতা নেই, আছে অতি চিকিৎসায় বা অকারণ চিকিৎসায়, প্রাতিষ্ঠানিক বিধি ও দায়বদ্ধতা না মেনে খুশি মতো অবৈজ্ঞানিক চিকিৎসায়। বিপরীত নির্মাণ করতে চাইলে এর বিরুদ্ধেই করা উচিত।
ডা. অরুণাভ সেনগুপ্ত। কলকাতা-১০৭
চলন্ত সিঁড়ি চাই
হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সের ১৭ নং থেকে ২৩ নং অর্থাৎ ৭টি প্ল্যাটফর্মের অবস্থান মূল স্টেশন থেকে অনেকটা দূরে। বাইরের রাস্তা দিয়ে ঘুরপথে সেখানে পৌঁছনোর চেয়ে মেন, কর্ড ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের যাত্রীরা সহজেই ওভার ব্রিজ দিয়ে হেঁটে শর্টকাটে দ্রুত পৌঁছে যেতে পারেন। কিন্তু ওভারব্রিজে নামা-ওঠার মাত্র একটা সিঁড়ি ও একটা ওঠার এসক্যালেটর আছে, যা দিয়ে শুধুমাত্র ১৭ নং প্ল্যাটফর্মে আসা যায়। নামার জন্য একমাত্র পায়ে চলা সিঁড়ি, যা ওঠার কাজেও ব্যবহৃত হয়। সেখানে নামার কোনও চলন্ত সিঁড়ি বা এসক্যালেটর নেই।
আবার, ১৭ নং প্ল্যাটফর্মে একটা মাত্র ওঠার এসক্যালেটর আছে। একসঙ্গে ৩-৪টে দূরপাল্লার ট্রেন আসা-যাওয়ার সময় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশুদের, বিশেষত অসুস্থ রোগীদের অবস্থা হয় প্রাণান্তকর। প্রতি প্ল্যাটফর্মে যুগপৎ ওঠা ও নামার চলন্ত সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে অসংখ্য নিত্যযাত্রীর যাতায়াতের সুবিধা হয়।
আবার নিউ কমপ্লেক্সের লম্বা লম্বা প্ল্যাটফর্মের শুধু প্রবেশ পথ ছাড়া আর কোথাও পানীয় জলের কল না-থাকায় যাত্রীদের খুবই সমস্যা হয়। কর্তৃপক্ষ একটু ভেবে দেখবেন।
সঞ্জীব রাহা। কৃষ্ণনগর, নদিয়া