আইনে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হতে চাইলে বিশেষ প্রবেশিকা দিতে হবে। প্রতীকী চিত্র।
আইনে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হতে চাইলে বিশেষ প্রবেশিকায় উত্তীর্ণ হতে হবে। সেই প্রবেশিকার নাম কমন ল অ্যাডমিশন টেস্ট (ক্যাট)। কনসর্টিয়াম অফ ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি-র পরিচালনায় পরীক্ষার আয়োজন করা হয়ে থাকে। অনলাইনে এই পরীক্ষার নাম নথিভুক্তকরণের প্রক্রিয়া ১ অগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্য়ন্ত চলবে। নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষায় মোট ১২০ নম্বরের পরীক্ষায় ১২০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
পরীক্ষার সময়, নম্বর এবং ধরন:
অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ৭ ডিসেম্বর দুপুর ২টো থেকে ৪টে পর্যন্ত মোট ২ ঘন্টার পরীক্ষায় সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর দেওয়া হবে এবং ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর বাদ পড়বে।
স্নাতক স্তরের পরীক্ষার নিয়ম:
কলা, বিজ্ঞান, বাণিজ্য বিভাগের যে কোনও বিষয়ে দ্বাদশ উত্তীর্ণরা ক্যাট ইউজি বিভাগের পরীক্ষা দিতে পারবেন। এর জন্য তাঁদের ২০২৫ কিংবা ২০২৬-এ সংশ্লিষ্ট পরীক্ষায় অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে।
স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষার নিয়ম:
ক্যাট পিজি বিভাগের পরীক্ষায় ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে আইনে স্নাতক হয়েছেন, এমন ব্যক্তিরা বসতে পারবেন। এর জন্য তাঁদের ২০২৫ কিংবা ২০২৬-এ স্নাতক হতে হবে।
আইনি নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহীদের ইংরেজিতে সাবলীল হওয়া প্রয়োজন। প্রতীকী চিত্র।
প্রবেশিকায় কোন কোন বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে?
স্নাতক স্তরে যাঁরা প্রবেশিকায় বসবেন, তাঁদের ইংরেজি ভাষা, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স-সহ জেনারেল নলেজ, লিগ্যাল রিজ়নিং, লজিক্যাল রিজ়নিং এবং কোয়ান্টিটেটিভ টেকনিকস্ বিষয়ে পড়াশোনার প্রয়োজন রয়েছে। এই সমস্ত বিষয় থেকেই প্রশ্ন করা হবে।
যাঁরা স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হতে চান, তাঁদের প্রবেশিকার জন্য সাংবিধানিক আইন, আইনশাস্ত্র, চুক্তি আইন, ফৌজদারি আইন, শ্রম আইন, পরিবেশ আইন, কম্পানি ল, প্রপার্টি ল-এর বিষয়ে জানতেই হবে। এই সমস্ত বিষয় থেকেই প্রশ্ন আসবে।
উচ্চ শিক্ষায় সুযোগ:
জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এলএলবি (স্নাতক), এলএলএম (স্নাতকোত্তর) ছাড়া এম ফিল, পিএইচ ডি, এলএলডি ইত্যাদি গবেষণামূলক পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু ডিপ্লোমা প্রোগ্রামও চালু করা হয়েছে, যাতে আইনের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করতে পারেন।
যে সব প্রতিষ্ঠানে কমন ল’ অ্যাডমিশন টেস্ট (ক্ল্যাট) দিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়—
• দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস, কলকাতা
• ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব স্টাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ল’, রাঁচি
• চাণক্য ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, পটনা
• ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি, অসম
• ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি ওড়িশা, কটক
• ন্যাশনাল ল’ ইনস্টিটিউট ইউনিভার্সিটি, ভোপাল
• হিদায়াতুল্লা ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, ছত্তিশগড়
• দামোদরম সঞ্জীবয়া ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, বিশাখাপত্তনম
• তামিলনাড়ু ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, তিরুচিরাপল্লি
• ন্যাশনাল ল’ স্কুল অব ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি, বেঙ্গালুরু
• নালসার ইউনিভার্সিটি অব ল’, হায়দরাবাদ
• দ্য ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডভান্সড লিগাল স্টাডিজ়, কোচি
• এইচ.পি. ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, শিমলা
• ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, যোধপুর
• রাজীব গাঁধী ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ল’, পঞ্জাব
• ডক্টর রামমনোহর লোহিয়া ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, লখনউ
• ধর্মশাস্ত্র ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, জবলপুর
• মহারাষ্ট্র ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, মুম্বই
• মহারাষ্ট্র ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, নাগপুর
• মহারাষ্ট্র ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, ঔরঙ্গাবাদ
• গুজরাত ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, গান্ধীনগর
• ডক্টর বি আর অম্বেডকর ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি
ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সেসে আইনের একাধিক বিষয় পড়ানো হয়ে থাকে। ছবি: সংগৃহীত।
কাজের সুযোগ:
এই প্রবেশিকা পরীক্ষা শুধু দেশের আইন বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইন নিয়ে পড়ার সুযোগই দেয় না। বরং, পরবর্তীতে পেশায় প্রবেশের ক্ষেত্রেও ক্ল্যাট-এর ফলাফল যথেষ্ট গুরুত্ব রাখে। সর্বভারতীয় স্তরে অন্যতম গুরুত্বপূর্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হিসেবে পরিচিত এই প্রবেশিকার ফলাফল কেন্দ্রীয় সরকারি এবং সরকারপোষিত সংস্থায় কাজের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে।
পড়াশোনার পর ক্যাম্পাস প্লেসমেন্ট-এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন ল’ ফার্ম এবং সংস্থায় যোগ দিতে পারেন। কেউ চাইলে সরাসরি আদালতেও আইনজীবী হিসাবে যোগদানের সুযোগ পান। তবে, সরকারি চাকরির ইচ্ছে থাকলে সিভিল সার্ভিসেস-এর মতো সর্বভারতীয় পরীক্ষাও দিতে পারবেন।
কোন কোন পদে কাজ মিলতে পারে?
আইনজীবী, আইন পরামর্শদাতা, আইন গবেষক এবং শিক্ষাবিদ— এই সমস্ত পদেই স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শেষ করার পরই প্র্যাকটিস করার সুযোগ পাওয়া যায়। একইসঙ্গে উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করলে মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাতেও প্রকল্পের আধিকারিক হিসেবে নিয়োগ করা হয়ে থাকে।