—ফাইল চিত্র।
‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে গত বছর থেকে শিক্ষা নিয়ে, এ বার আরও সতর্ক স্কুল শিক্ষা দফতর। একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ‘ট্যাব’-এর টাকা যাতে তাদের অ্যাকাউন্টে ঢোকে, অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে চলে না যায়, তা নিশ্চিত করতে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে শিক্ষা দফতর। ছাত্রদের এই টাকা পেতে গেলে কী কী নিয়ম মানতে হবে তা এ বার নির্দেশিকা আকারে বিভিন্ন স্কুলে পাঠাল শিক্ষা দফতর।
পড়ুয়াদের মুচলেকা-সহ অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন করার পরই তারা ১০ হাজার টাকা করে পাবে বলে জানানো হয়েছে। গতবছর রাজ্য জুড়ে বহু পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা তাদের নিজেদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি বলে অভিযোগ উঠেছিল। অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছিল সেই টাকা।
পড়ুয়াদের জন্য যে ২০ দফার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য আলাদা আলাদা ওটিপি আসবে। অর্থাৎ একজন প্রধানশিক্ষক যদি ১৫০ জন পড়ুয়ার তথ্য আপলোড করেন তা হলে ১৫০ জন পড়ুয়ার ওটিপি আসবে। পড়ুয়ারা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রাজ্যের বাইরে কোনও শাখায় খুলতে পারবে না। প্রত্যেক পড়ুয়াকে আলাদা করে দু’টি ফর্ম পূরণ করতে হবে মুচলেকা হিসাবে।
স্কুলের প্রধানশিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এই দু’টি ফর্মের মধ্যে একটিতে পড়ুয়ারা তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, আধার নম্বর এবং নিজের বানান যা লিখে জমা দেবে। অপর ফর্মটিতে পড়ুয়ারা মুচলেকা হিসেবে লিখবে যে এই টাকা খালি ট্যাব বা মোবাইল কেনার জন্যই তারা ব্যবহার করবে।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘গতবারের ট্যাব কেলেঙ্কারি থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকার হয়ত একটু অতি সতর্ক হতে চাইছে, তাই বেশ কিছু নতুন নতুন শর্ত যুক্ত করেছে। কিন্তু ছাত্র ছাত্রীদের ঘোষণা পত্রে সই করতে হবে তারা অনলাইন ক্লাসের জন্য এই ট্যাব বা মোবাইল ব্যবহার করবে। প্রশ্ন হচ্ছে অনলাইন ক্লাস তো এখন হয় না। এখন ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে এসে ক্লাস করে। তা হলে প্রায় হাজার কোটি টাকা প্রতি বছর অপচয় কেন?’’
পরবর্তীকালে পড়ুয়াদের মোবাইলে বা ইমেল মারফত একটি লিঙ্ক আসবে। এই লিঙ্কে ক্লিক করে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, আধার নম্বর এবং নিজের নামের বানান যা লিখেছিল ফর্মে তা সঠিক ভাবে লেখা হয়েছে কি না মিলিয়ে নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার কাছে কাছে একটি ওটিপিও আসবে। সব তথ্য যাচাইর পর ওটিপি দিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করতে হবে। তারপর দফতরের তরফ থেকে একটি ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও পাঠানো হবে। যা প্রমাণ হিসেবে থাকবে যে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া সমস্ত কিছু ভেরিফিকেশন করে জমা দিয়েছে।
এ ছাড়াও এ বছর থেকে শিক্ষা পোর্টালে গিয়ে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে ঢুকতে হলে শুধু প্রধান শিক্ষকদের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিলেই হবে না, সঙ্গে প্রধানশিক্ষকের মোবাইলে ওটিপি আসবে। সেই ওটিপি দিলে তবেই পোর্টালে ঢোকা যাবে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘যাতে ছাত্রছাত্রীদের টাকা অন্যত্র না চলে যায় তার জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রধানশিক্ষকের কাজ, ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা সমস্তটা উল্লেখ করা রয়েছে। এই নিয়মের ফলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়া উভয় টাকা নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পাওয়ার ক্ষেত্রে সুরক্ষিত থাকবে।’’
শিক্ষক দিবসের দিন, অর্থাৎ ৫ সেপ্টেম্বর থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে ঢোকা শুরু হয়।