International Day of Yoga & Music

কলম-কালির একঘেয়েমি কাটাতে পারে সঙ্গীত ও যোগাভ্যাস! শিক্ষাঙ্গনে কতটা প্রয়োজন নিয়মিত চর্চার?

শনিবার একই সঙ্গে বিশ্ব সঙ্গীত দিবস এবং আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালন করা হচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনে এই দিনগুলি আলাদা করে পালন করা হয় কেন, তারই খোঁজ নিল আনন্দবাজার ডট কম।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৫ ১৬:১৩
Share:

শিক্ষা প্রাঙ্গনে সঙ্গীত ও যোগচর্চার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে বিশেষ দিনের উদ্‌যাপনে শামিল পড়ুয়ারা।

বাংলার ব্রতচারী বা স্কুলের নির্দিষ্ট ক্রীড়া পর্ব একেবারেই নতুন কোনও বিষয় নয়। রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে সঙ্গীতের প্রাথমিক শিক্ষাও দেওয়া হয়। স্কুল কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগব্যায়াম চর্চা হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। আবার প্রথাগত শিক্ষার বাইরে বেঞ্চ বাজিয়ে বেসুরো গানের অভ্যাসও অনেক শিক্ষার্থীদেরই রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চর্চাই শিক্ষার্থীদের সুস্থতার দিকে এক ধাপ এগিয়ে রাখে। ২১ জুন দিনটি আন্তর্জাতিক স্তরে যোগব্যায়াম এবং সঙ্গীত দিবস হিসাবে পালন করা হয়। আলাদা কার্যক্রম হলেও বিশ্ব সঙ্গীত দিবস এবং আন্তর্জাতিক যোগ দিবস সুস্থতার বার্তাই দিচ্ছে।

Advertisement

ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজ়িয়ামের যোগা দিবসের উদ্‌যাপনে শামিল বড় থেকে ছোট সকলেই।

কী সেই বার্তা?

২০২৫-এ সঙ্গীত দিবসের বিষয় ‘হিলিং থ্রু হারমনি’ অর্থাৎ ঐক্যতানেই নিরাময়। অন্য দিকে যোগদিবসের ভাবনা এক পৃথিবী এক স্বাস্থ্য (ওয়ান আর্থ ওয়ান হেলথ)। বিষয় ভাবনার দিক থেকে উপশম এবং মুক্তির কথাই বারবার উঠে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষাঙ্গনেও এর প্রভাব যথেষ্ট।

Advertisement

কিন্তু কেন?

বেথুন কলেজের মনোবিদ্যা বিষয়ের বিভাগীয় প্রধান নীলাঞ্জনা বাগচীর মতে, প্রযুক্তি নির্ভর যুগে দ্রুত গতিতে পড়াশোনা ধরন বদলাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে, শিক্ষাঙ্গনের খুদে পড়ুয়া থেকে শুরু করে উচু ক্লাসের ছেলে মেয়ে— সকলেই ক্লান্ত কিংবা হতাশ হয়ে পড়ছে। এ থেকে মুক্তির জন্য যোগব্যায়াম চর্চা কিংবা সঙ্গীত সাধনার মত প্রথাগত থেরাপির পুর্নব্যবহার শুরু হয়েছে। আলাদা করে একটি দিন পালন করা হলে, শিক্ষার্থীরা এর প্রয়োজনীয়তা আরও ভাল ভাবে উপলব্ধি করতে পারবে।

যোধপুর পার্ক বয়েজ়ের ছাত্ররা শনিবারের আনন্দপাঠ-এর ক্লাসে।

একটি বিশেষ দিন উদ্‌যাপনের মাধ্যমে কতটা সচেনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব?

যোধপুর পার্ক বয়েজ়-এর প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানিয়েছেন, স্কুলস্তরে পড়ুয়ার মেধা এবং সৃষ্টিশীলতার দক্ষতা যাচাই করার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য শারীরশিক্ষার ক্লাস কিংবা শনিবারের আনন্দপাঠ-এর অংশ হিসাবে বইয়ের বাইরে কিছুটা সময় সৃজনশীলতার পাঠ দেওয়াও হয়ে থাকে। নিয়মিত ভাবে চর্চায় রাখার পাশাপাশি, একটি বিশেষ দিনে তা কতটা ছাত্রমনে প্রভাব ফেলছে, সেটা যাচাই করার সুযোগ থাকে।

সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ক্রীড়া আধিকারিক রাজকুমার মোদকের কথায়, যোগ বা সঙ্গীত—এই দুই-ই সাধনার অঙ্গ। তাই এর গভীরতা একটি দিন পালনেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি আরও বলেন, “যোগ আদতে মুক্তি বা মোক্ষ লাভের দিশা দেখায়। অন্য দিকে যোগব্যায়াম সেই পথের শাখা মাত্র। তাই শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার লক্ষ্যে চর্চা করতে গিয়ে এর মূল লক্ষ্য থেকে যেন আমরা সরে না আসি।” উল্লেখ্য শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ছৌ নাচ প্রদশর্নীর মাধ্যমে সঙ্গীত এবং যোগা দিবস পালন করা হয়।

ছৌ নাচ প্রদশর্নীর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সঙ্গীত এবং যোগা দিবস পালন করা হল সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়্গপুরের তরফে যেমন নির্দিষ্ট দিনের পরিবর্তে ১০০ দিনের বিশেষ সচেনতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি, স্থানীয় স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ভাল থাকা সুনিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ভাবে ক্লাস করাচ্ছেন। এই কর্মসূচির মূল ভাবনা আয়ুষ মন্ত্রকের তরফে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

তবে, বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচির আয়োজনও করা হয়েছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজ়িয়াম, সায়েন্স সিটি এবং সেন্ট্রাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং-এর আধিকারিক, কর্মী, এনসিসি ক্যাডট এবং বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের যোগা দিবস উপলক্ষে বিশেষ ক্লাস করানো হয়। ক্লাসের বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অর্জুন পুরষ্কারপ্রাপ্ত অ্যাথলেটিক সোমা বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, মন এবং শরীরে ভাল থাকার জন্য যোগব্যায়াম চর্চা নিয়মিত ভাবে সকলেরই করা প্রয়োজন।

বিআইটিএম-এর যোগা-র কর্মশালায় আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় পড়ুয়ারা।

বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়াম (বিআইটিএম)-এর যোগা-র কর্মশালা এবং কুইজ প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের উৎসাহ ছিল দেখার মত। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি) শিবপুরের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি, স্থানীয় স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে বিশেষ যোগ অভ্যাসের ক্লাসও করানো হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement