অনামিকা মণ্ডল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পুলিশি তদন্তে ভরসা রাখছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে সহযোগিতা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে ঘটনাস্থলের কোনও ফুটেজ তাঁদের কাছে নেই বলেও সাফ জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক ঝিল থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলকে। পরে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এই ঘটনার চার দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিল, ঘটনাস্থলের কোন ভিডিয়ো ফুটেজ নেই তাদের কাছে। আলাদা করে কোনও তদন্তও করবেন না কর্তৃপক্ষ। তাঁরা ভরসা রাখছেন পুলিশি তদন্তে উপরেই।
সহ উপাচার্য অমিতাভ দত্ত বলেন, "আমাদের ৪ নম্বর গেটের সামনে মোট তিনটি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু যে জায়গাটি ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে আমাদের কোনও ক্যামেরার না থাকায় ভিডিও ফুটেজ আমাদের নেই। বাকি ভিডিও ফুটেজ ছিল আমরা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।"
এ দিকে সোমবার সকালেই জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশ ডেকে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার পড়ুয়াকে। এ দিন লালবাজারে যান মৃতার বাবা। তিনি আগেই অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, যতটুকু ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে, তা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের এ দিন যাদবপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, তাঁরা ক্যাম্পাসে নজরদারি বাড়ানোর কথা ভাবছেন। তৈরি হবে নতুন কমিটি। এর পর থেকে ক্যাম্পাসে কোনও অনুষ্ঠান করতে হলে মানতে হবে নির্দিষ্ট বিধি। নয়া কমিটিই নির্ধারণ করবে সেই বিধি। কোথাও নিয়ম ভাঙা হচ্ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবেন সদস্যেরা।
যাদবপুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ উঠেছে নিরাপত্তাব্যবস্থায় গাফিলতির। নির্দিষ্ট সময়ের পরও কেন পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসে থাকেন, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এ দিন কর্তৃপক্ষ জানান, সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা কেমন, তা খতিয়ে দেখতে গড়া হবে বিশেষ দল। কোথাও মাদক সেবনের মতো ঘটনা ঘটছে কি না, তা নজরে রাখা হবে।
২০২৩-এ বাংলা প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরই ক্যাম্পাসে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দাবি, অর্থাভাবে তা সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না। হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তারক্ষী বৃদ্ধির বিষয়ে জানানো হয়েছে সরকারকে।
পাশাপাশি, ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা জলাশয়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বসানো হচ্ছে বেড়া। কারণ অনামিকাই প্রথম নন। এর আগে দোল উৎসবে এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল ওই ঝিল থেকে।
ক্যাম্পাসে বহিরাগত ঠেকাতেও কড়া পদক্ষেপ করছে যাদবপুর। এ দিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গাড়ি ও বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে।