— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ক্রমশ বাড়ছে উচ্চশিক্ষার খরচ। দেশে বা বিদেশে পড়াশোনা করতে তাই বাড়ছে ঋণ নির্ভরতা। আর সেখানেও বাড়ছে প্রতিযোগিতা। কেন্দ্রের রিপোর্টে উঠে আসছে সেই তথ্যই।
২০১৪ থেকে ২০২৫— এক দশকে ঋণদানের পরিমাণ বেড়েছে। হিসাব বলছে, শিক্ষাঋণ হিসাবে ২০১৪ সালে যেখানে ৫২,৩২৭ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল, ২০২৫ সালে সেখানে ১,৩৭,৪৭৪ কোটি টাকার মঞ্জুর হয়েছে। কিন্তু ঋণগ্রহীতা পড়ুয়ার সংখ্যা কমেছে এই এক দশকে। ২০১৪ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ওই সংখ্যা ঋণগ্রহীতার সংখ্যয়া ২৩.৩৬ লক্ষ থেকে কমে ২০.৬৩ লক্ষ হয়েছে।
তবে কি কমছে উচ্চশিক্ষার হার? সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির ‘রিভিউ অফ স্কিমস ফর এডুকেশন ঋণ অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল অ্যাক্সেসিবিলিটি ইন হায়ার এডুকেশন’-এর রিপোর্টে অবশ্য দু’টি কারণ প্রকট হয়ে উঠছে।
প্রথমত, পড়াশোনার জন্য ঋণ নেওয়ার পর তা শোধ করার মেয়াদ থাকে ডিগ্রি অর্জনের পর এক বছর পর্যন্ত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পড়াশোনা শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে চাকরি পাচ্ছেন না বেশির ভাগ পড়ুয়াই। তাই ঋণ শোধ করতে পারছে না তাঁরা।
স্ট্যান্ডিং কমিটির মতে, এ ক্ষেত্রে ওই সময়সীমা আরও এক বছরের জন্য বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যাতে ছেলেমেয়েরা ঋণ শোধ করার জন্য অতিরিক্ত সময় এবং চাকরির সুযোগ— দু’টোই পান।
অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘পিএম বিদ্যালক্ষ্মী স্কিম’-এর মতো একাধিক প্রকল্পের অধীনে পড়ুয়ারা ঋণ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন। ওই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে আইআইটি, এনআইটি, আইআইএম-এর মতো প্রতিষ্ঠানেগুলিতে ভর্তি হওয়ার জন্য ঋণ নিতে পারেন পড়ুয়ারা।
কিন্তু ব্যাঙ্কগুলিতে ওই সমস্ত স্কিম-এর অধীনে ঋণ নেওয়ার জন্য নথি যাচাইকরণের দীর্ঘ প্রক্রিয়া থাকে। অনেক ক্ষেত্রে কম সুদে টাকা ঋণ দানে অনীহা দেখা যায়। অভিভাবকের উপস্থিতি ছাড়ার ঋণের আবেদন গ্রহণও করা হয় না। সে ক্ষেত্রে বিপদে পড়েন বহু পড়ুয়াই।
সরকারি রিপোর্ট বলছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে এখনও পর্যন্ত ৮৬০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২২ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়াকে আর্থিক সাহায্য করেছে কেন্দ্র। সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটি-র পরামর্শ, উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং আর্থিক পরিষেবা বিভাগকে সুনিশ্চিত করতে হবে, দেশের বেশির ভাগ পড়ুয়া যাতে ঋণ নিতে পারেন। বিশেষ করে দারিদ্রসীমার নিচে থাকা পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যাতে কোনও আর্থিক সমস্যায় পড়তে না হয়, সে দিতে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
একই সঙ্গে, গ্রামীণ এলাকায় বেশি করে ‘এডুকেশনাল লোন’ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। ব্যাঙ্কগুলিকেও পড়ুয়াদের ঋণের আবেদন মঞ্জুরের নিয়ম শিথিল করতে হবে, এমনটাই পরামর্শ দিয়েছে ওই কমিটি।