নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের অনুমতি ছিল রামলীলা ময়দান অবধি মিছিল করার। সেই অনুযায়ী সোমবার বেলা ১টা নাগাদ মিছিল বের হয় শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে। কিন্তু আচমকাই মত বদল করেন ২০২৫ এসএলএসটি-র নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা সোজা এগিয়ে যান এসএন ব্যানার্জি রোডের দিকে। তালতলার মোড়ে পৌঁছয় বিক্ষোভ মিছিল।
এর আগেই বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছিলেন বিধাননগরে নয়, এ বার মিছিল শিয়ালদহ স্টেশন থেকে। নতুন চাকরিপ্রার্থীরা শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন। সকলের হাতে ছিল থালা। দাবি তিন দফা, অভিজ্ঞতার নিরিখে ১০ নম্বর ইন্টারভিউয়ের আগে দেওয়া যাবে না কর্মহারা ‘যোগ্য’ প্রার্থীদের। একই সঙ্গে বাড়াতে হবে শূন্যপদ এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রকাশ করতে হবে ওএমআর শিট।
এর আগে স্থির হয়েছিল নতুন চাকরিপ্রার্থীরা বিধাননগরের করুণাময়ীতেই জমায়েত হয়ে বিকাশ ভবন অভিযান করবেন। পরে স্থান পরিবর্তন হয়। এসএসসি নতুন চাকরিপ্রার্থী শিশিরকুমার দাস বলেন, “আন্দোলনকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা খাস কলকাতায় মিছিল করছি। রবিবার রাত পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে এ বিষয়ে। তার পরই রামলীলা ময়দান পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি মিলেছে। আমাদের মূল দাবি অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর বাতিল করতে হবে।”
নতুন চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, যথেষ্ট যোগ্যতা এবং মেধা থাকা সত্ত্বেও অভিজ্ঞতার কাছে হেরে গিয়েছেন তাঁরা। এটি আদতে সরকারি বঞ্চনারই নামান্তর, মনে করছেন তাঁরা। তাই অভিজ্ঞতার জন্য দেওয়া অতিরিক্ত ১০ নম্বর বাতিলের দাবিতে রাজপথে তা নামতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। নতুন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় কেউ পূর্ণমান ৬০-এর মধ্যে পেয়েছেন ৬০। কেউ পেয়েছেন ৫৯। অথচ, ১০০ শতাংশ নম্বর পাওয়ার পরেও ডাক পাননি ইন্টারভিউয়ে।
নিজস্ব চিত্র।
ইতিমধ্যে নতুন চাকরিপ্রার্থীদের তরফে হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছে। বিকাশ ভবনের ধর্নামঞ্চ করে আন্দোলনের জন্য অনুমতিও চাওয়া হয়েছে। এর আগে দু’দিন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা বিধাননগরে বিক্ষোভ দেখালে, পুলিশ তাঁদের তুলে দেয় অনুমতি না থাকায়। বিধাননগর কমিশনারেট ও বিধাননগর উত্তর থানায় মিছিল করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন একাংশ প্রার্থী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও অনুমোদন দেয়নি পুলিশ। তাই কলকাতার রাজপথে আন্দোলনে বাধ্য হয়েছি।
নতুন চাকরিহারাদের মূলত তিনটে দাবি রয়েছে— এক, অভিজ্ঞতার জন্য দশ নম্বর কোনও ভাবেই কর্মহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেওয়া যাবে না। দুই, অবিলম্বে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করতে হবে। তাঁদের দাবি, প্রায় ১৩ হাজার শূন্যপদ বৃদ্ধি করতে হবে। তিন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে সমস্ত প্রার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ্যে আনতে হবে।
এর আগে ১৭ নভেম্বর করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন অভিযান করেন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। সেন্ট্রাল পার্কের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন প্রায় সাত ঘণ্টা। অনুমতি না থাকায় পুলিশ সেখান থেকে সরিয়ে দেয় তাঁদের। ১৮ নভেম্বর ফের সার্ভিস কমিশনের অভিযানের জন্য করুণাময়ীতে জমায়েত হলে পুলিশ তাঁদের আটক করে।