Holi 2025 Special

দু’চোখ ভরে পড়ুয়ারা স্বপ্ন দেখে, কল্পনার রঙে বসন্ত উৎসব

দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের কাছে পৃথিবীর সব রঙই কালো। তবুও রং উৎসবে শামিল হতে বাধা নেই। আছে শুধু ফুলের সমাহার।

Advertisement

স্বর্ণালী তালুকদার

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ১২:০৬
Share:

ফুল দোলে শামিল ছোট থেকে বড় সকলেই। নিজস্ব চিত্র।

দৃষ্টিহীন শিশুদের কাছে রং নিছক খেলার সামগ্রী নয়। তবুও অচেনার উদ্দেশে ফুল ছুড়ে দিতে কিংবা দোলের শুভেচ্ছা জানাতে কোনও দ্বিধা নেই। ওরা কল্পনার রং নিয়ে মনের ক্যানভাসে নিজেদের স্বপ্নের ছবি আঁকে। গতানুগতিক রং খেলার বদলে লাল-নীল-হলুদ ফুলের দোল উৎসবে দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের নিয়ে শামিল হন লাইটহাউস ফর দ্য ব্লাইন্ডের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

Advertisement

কোন বসন্তে জাগব আমি? অন্ধকারে নিভে যাওয়া বাতির আলো জ্বালবে কে?

প্রশ্নগুলো ছোট থেকেই দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের মনে ঘুরপাক খায়। কিন্তু উত্তরটা সেই প্রশ্নেই লুকিয়ে আছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিয় সৎপতি জানিয়েছেন, অনেকেরই দৃষ্টি রঙের কারণে হারিয়েছে। তাই দোলের আনন্দে শামিল হতে ওদের ভয় লাগে। তিনি আরও বলেন,“ফুল দোল সেই আতঙ্ক অনেকটাই দূর করতে পেরেছে। ভয়কে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার স্পর্ধাই বাচ্চাদের সাহস দেয়।”

Advertisement

লাল-নীল-হলুদ ফুলে সেজে ওঠে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।

ফুল দোলের বিশেষত্ব এই যে, নাচে গানে কবিতায় মেতে ওঠা একদল কিশোর কিশোরী হাত তুলে শুধু আকাশ ছুঁতে চায়। বদলে পৌঁছে দিতে চায় মুঠো মুঠো ফুলের পাপড়ি। আবার কখনও ফুলের নতুন গন্ধে খুশির হাসি দ্বিগুণ হয় নন্দিনী, রাজকুমার, রাজেশদের। শামিল হন স্কুলের প্রাক্তনীরাও, যাঁদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে কেন্দ্র সরকারি সংস্থায় কর্মরত।

স্কুলে পাঁচ বছর ধরে ইতিহাসের শিক্ষক হিসাবে ক্লাস করান দিলীপ সাউ, যিনি নিজেও দৃষ্টিহীন। তিনিও ছোটদের সঙ্গে ফুলের রং খেলায় শামিল হতে পেরে খুশি হন। তাঁর আশা, একদিন এই ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাই আকাশ ছোঁবে।

নিজের ছন্দে মগ্ন পড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা থেকে শুরু ভিনরাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামের একঝাঁক পড়ুয়াদের নিয়ে ১১ বছর ধরে ফুল দোলের আয়োজন করে চলেছে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই প্রসঙ্গে সংস্থার তরফে সৌমেনকুমার সাহা জানিয়েছেন, ১১ বছর আগে একদিন শুরু হয়েছিল এই আনন্দ উৎসব। এমন আয়োজন করতে হলে মনকে ইতিবাচক রাখতেই হবে, তবেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। সকলের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করতে তাই ‘না’ এবং তার সমার্থক শব্দগুলি ভুলে যাওয়াই শ্রেয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement