আইএস জঙ্গি সন্দেহে মুম্বইয়ে ধৃত যুবক আরিফ মজিদকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এনআইএ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। শুক্রবার মুম্বই থেকে আরিফকে ধরে এনআইএ।
আইএস জঙ্গি দলে কী করে নাম লেখাল ওই যুবক? কী ধরনের জঙ্গি প্রশিক্ষণ পেয়েছে সে? দলে তার কাজই বা কেমন ছিল?—এই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান এনআইএ-র আইনজীবী। বিশেষ আদালতের বিচারক পি আর দেশমুখ তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেন।
ভিনদেশে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আইএস, আরিফ এবং আরও তিন যুবকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে এনআইএ।
এ দিন গুয়াহাটিতে ডিজিদের সম্মেলনে এই গ্রেফতারির ব্যাপারে রাজনাথ সিংহ বলেন, “আমরা, কারওকে অযথা হেনস্থা করতে চাই না। প্রতিটি ক্ষেত্রেই মামলা ধরে ধরে বিবেচনা করা হবে।”
পাক মদত পুষ্ট জঙ্গিদের পাশাপাশি ইরাক-সিরিয়া ফেরত জঙ্গি মনোভাবাপন্ন এই যুবকরা দেশের নতুন শত্রু বলে ডিজিদের অনুষ্ঠানে স্বীকার করেন আইবি প্রধান আসিফ ইব্রাহিম।
কী করে আরিফের খোঁজ পেলেন গোয়েন্দারা?
শুক্রবার সকালে তুরস্ক ফেরত বিমান থেকে মুম্বই বিমানবন্দরে নামার পর বছর তেইশের ওই যুবককে আটক করেন গোয়েন্দারা। আইএস জঙ্গিদের দলে নাম লিখিয়ে ইরাকে লড়াইয়ের কথা স্বীকার করার পর তাকে গ্রেফতার করে এনআইএ। গোয়েন্দাদের সন্দেহ ‘বিশেষ’ কোনও কাজের জন্যই ভারতে পাঠানো হয়েছে ওই যুবককে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত মে মাসে বাগদাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ২২ জন পুণ্যার্থীর একটি দল। সেই দলের সঙ্গেই ইরাক যায় চার ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র। দলের অন্যরা পুলিশকে জানায়, একটি গাড়িতে চেপে বাগদাদের পশ্চিমে আইএস জঙ্গিদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ফালুজা শহরের দিকে রওনা দেয় আরিফ, ফাহাদ, আমান এবং শাহিন টাঙ্কি নামে এই চার যুবক। গত অগস্টে আরিফের বাড়িতে ফোন করে সিরিয়ার যুদ্ধে তার ‘শহিদ’ হওয়ার খবর দেয় শাহিন। কিন্তু সে ঘটনা যে ঠিক নয় তা আরিফের দেশে ফেরাতেই প্রমাণিত হল।
জেরায় তদন্তকারীদের আরিফ জানিয়েছে, কল্যাণের বাড়ি থেকে ইরাকে পালায় সে। ইরাক এবং সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের হয়ে লড়ার সময় দু’বার আহত হয় আরিফ। গত রবিবার ইরাক থেকে তুরস্কে পৌঁছয় সে। চিকিত্সার প্রয়োজনে তুরস্ক থেকে ভারতে ফিরে এসেছে বলে গোয়েন্দাদের জানিয়েছে আরিফ।
সম্প্রতি এনআইএ-র সঙ্গে যোগাযোগ করে আরিফের তুরস্ক পাড়ি দেওয়ার কথা জানান আরিফের বাবা ইজাজ মজিদ। আরিফ যে ভারতে ফিরে আসতে ইচ্ছুক, সে কথাও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ অনুমতিতে ওই যুবকের কাউন্সেলিংয়ের জন্য মনোবিদের সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এনআইএ-র আধিকারিকেরা। আর কেউ যাতে আইএস-এ যোগ না দেয় সেই বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় ওই সংস্থা।