আদালত অবমাননার দায়ে বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল। প্রায় সওয়া পাঁচ কোটি টাকার দু’টি দুর্নীতি মামলায় নির্দিষ্ট দিনে হাজিরা না দেওয়ায় বুধবার এই রায় দিল ঢাকার এক আদালত। খালেদার সঙ্গে অন্য দু’জনের বিরুদ্ধে একই নির্দেশ জারি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এ দিন ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার ওই তিন জনের জামিনের আবেদনও বাতিল করে দেন। বিএনপি-র চেয়ারপার্সন খালেদা ছাড়া বাকি দু’জন হলেন মাগুরার প্রাক্তন সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।
২০১১-র অগস্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা-সহ চার জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতিদমন কমিশন একটি মামলা দায়ের করে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে প্রায় সওয়া তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। ২০১২তে খালেদা-সহ ওই চার জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এই মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন, খালেদার প্রাক্তন রাজনৈতিক সচিব হারিজ চৌধুরী, জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং মনিরুল ইসলাম খান। এদের মধ্যে হারিজ প্রথম থেকেই পলাতক। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। খালেদা-সহ বাকি দু’জন জামিন পান।
২০০৮-এ দুর্নীতিদমন কমিশন খালেদার নামে অন্য মামলাটি দায়ের করে। অনাথদের জন্য কাজ করা একটি সংস্থায় প্রায় দু’কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ আনা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। ২০১০-এ খালেদা এবং তারেক রহমান-সহ ছয় জনের বিরুদ্ধে এ মামলার চার্জশিট জমা পড়ে। অন্য অভিযুক্তরা হলেন কাজী সালিমুল হক কামাল, শরফুদ্দিন আহমেদ, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং মমিনুর রহমান। তারেক উচ্চ আদালতের জামিনে গত ছ’বছর বিদেশে রয়েছেন। সালিমুল ও শরফুদ্দিন রয়েছেন জামিনে। বাকি দু’জন পলাতক।
এই মামলা দু’টির শুনানি ছিল গত জানুয়ারিতে। কিন্তু, ছোট ছেলে কোকোর মৃত্যুর কথা জানিয়ে ওই দিন আদালতে না এসে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় চেয়ে আবেদন জানান খালেদা। বিচারক তা মঞ্জুর করে পরবর্তী শুনানির দিন ঘোষণা করেন। এ দিন ছিল সেই শুনানি। কিন্তু আগের কয়েক বারের মতো এ দিনও আদালতে হাজিরা দেননি বিএনপি নেত্রী। এই মামলায় ৬৭ দিন আদালত বসলেও খালেদা মোটে সাত দিন সেখানে হাজিরা দেন। গত ২৪ ডিসেম্বর শেষ বারের মতো আদালতে গিয়েছিলেন তিনি।