নাইজেরিয়ার স্কুলে ছাত্র সেজে জঙ্গি, হত ৪৭

প্রার্থনাসভায় স্কুলপোশাক পরেই ঢুকে পড়েছিল সে। স্কুলের কারও কোনও সন্দেহই হয়নি। সবাই যাকে ছাত্র ভেবেছিল, সে যে আদতে জঙ্গি তা বোঝা গেল আত্মঘাতী বিস্ফোরণের পর। ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ছাত্রবেশে স্কুলের প্রার্থনাসভায় ঢুকে পড়া ওই ‘ছাত্র’ই নাইজেরিয়ার পোটিস্কাম শহরের ‘গভর্নমেন্ট সায়েন্স সেকেন্ডারি স্কুল’-এ আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ১৩:২৫
Share:

পোটিস্কামের হাসপাতালে চলছে চিকিত্সা। ছবি: এপি।

প্রার্থনাসভায় স্কুলপোশাক পরেই ঢুকে পড়েছিল সে। স্কুলের কারও কোনও সন্দেহই হয়নি। সবাই যাকে ছাত্র ভেবেছিল, সে যে আদতে জঙ্গি তা বোঝা গেল আত্মঘাতী বিস্ফোরণের পর। ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ছাত্রবেশে স্কুলের প্রার্থনাসভায় ঢুকে পড়া ওই ‘ছাত্র’ই নাইজেরিয়ার পোটিস্কাম শহরের ‘গভর্নমেন্ট সায়েন্স সেকেন্ডারি স্কুল’-এ আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে। যার জেরে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৪৭ জন, যার মধ্যে ওই স্কুলের ৪৬ ছাত্র রয়েছে। ঘটনায় গুরুতর জখম ৭৯ জন। ঘটনার দায় এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি সংগঠন স্বীকার না করলেও, সন্দেহের তির বোকো হারামের দিকেই।

Advertisement

কী হয়েছিল সোমবার?

শহরের এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, সকাল তখন সাতটা বাজে। স্কুলের ছাত্ররা অ্যাসেম্বলি হলে তখন প্রার্থনা সভায় ব্যস্ত। তার মধ্যেই কোনও ভাবে ছাত্রের ছদ্মবেশে সেখানে ঢুকে পড়ে ওই জঙ্গি। তার পরেই বিস্ফোরণ ঘটে। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইয়োবে প্রদেশের পোটিস্কাম-এর ওই স্কুলে আত্মঘাতী এই হামলার ঘটনায় সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন ওই প্রদেশের গভর্নর। তিনি পোটিস্কাম ও তার আশপাশের এলাকার সমস্ত স্কুল আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

নাইজেরিয়ার স্কুলে হামলার ঘটনা এই প্রথম ঘটল তা নয়। এমনকী, ইয়োবে প্রদেশেও এর আগে বেশ কয়েক বার জঙ্গি হামলা হয়েছে। গত পাঁচ বছর ধরে বোকো হারাম গোষ্ঠী স্কুলকেই তাদের আক্রমণের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। মতাদর্শগত ভাবে ওই গোষ্ঠী মনে করে, মেয়েদের স্কুলে যাওয়া উচিত নয়। তাদের মতে, ছেলেদেরও কেবলমাত্র ধর্মশিক্ষা নেওয়া উচিত। সেই কারণেই বোকো হারামের লক্ষ্য বার বারই হয়েছে এখানকার স্কুলগুলি।

গত ১৭ই অক্টোবর নাইজেরীয় সরকার দাবি করে, বোকো হারাম গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের যুদ্ধ বিরতি চুক্তি হয়েছে। কিন্তু, তার পরে দু’সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই, ওই গোষ্ঠীর প্রধান আবুবকর সেকু একটি ভিডিও ফুটেজে দাবি করেন, “সরকারের সঙ্গে এমন কোনও বোঝাপড়া হয়নি। এটা সর্বৈব মিথ্যা।”

ওই দিনের ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নিহতের আত্মীয়েরা। তাঁদের নিশানায় বোকো হারামের অত্যাচার। নিহত এক ছাত্রের দাদা বলেন, “বিস্ফোরণ কেড়ে নিয়েছে আমার ষোলো বছরের ভাইকে। বোকো হারাম একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। ওদের দমন করতে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে।” প্রশাসন যদিও জঙ্গি দমনের সমস্ত আশ্বাস দিয়েছে।

ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আক্রান্তদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট গুডলাক জনাথন। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন