বোমা-গুলির লড়াইয়ে ফের অশান্ত পাড়ুই।
তৃণমূল বনাম বিজেপি-র ওই লড়াইয়ের সৌজন্যে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে পাড়ুই থানার সাত্তোর। চার পাশ ঢেকে গিয়েছে বারুদের ধোঁয়ায়।
কয়েক দিন ধরেই বীরভূমের একাধিক গ্রামে ঘরছাড়া কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে ফেরানো নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি পরস্পরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সোমবার সকালে এক বিজেপি কর্মী আব্দুল সালামকে মারধরের ঘটনায় নতুন করে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। ওই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে তৃণমূলের দিকে। তার জেরে ওই দিন রাতেই বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে বোমাবাজি ও গোলাগুলিতে উত্তাল হয়ে ওঠে পাড়ুইয়ের বেলপাতা গ্রাম। সংঘর্ষের রেশ ছড়িয়ে পড়ে মাখড়া এবং ছাতারবাঁদিতে। মঙ্গলবার রাতে সেটাই বড় আকার নেয় সাত্তোরে।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাখড়া ও বেলপাতার আশপাশের এলাকায় দুই দলই তাদের লোকজন জড়ো করতে থাকে। এর পর রাতে তারা জড়ো হয় সাত্তোরে। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের কিছু গ্রামছাড়া কর্মী-সমর্থক সাত্তোরে ঢুকতে চেষ্টা করে। তাদের বাধা দেয় বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকেরা। তখন ওই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা বোমা ছুড়তে ছুড়তে গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। বিজেপিও পাল্টা বোমা ছোড়ে। উভয় পক্ষের এই বোমাবাজির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে চলে দু’দলের বোমা-গুলির লড়াই। অভিযোগ, ভাঙচুর করা হয় বিজেপি-র দুই কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। এর পরে দুই দল ধীরে ধীরে পিছু হটে। এই মুহূর্তে সাত্তোরে পুলিশ পিকেটিং চলছে। টহল দিচ্ছে রেড কমব্যাট বাহিনীও। তাদের নজরদারিতে থমথমে হয়ে রয়েছে সাত্তোর।
সাত্তোরের তৃণমূল অঞ্চল সম্পাদক শেখ মুস্তাফা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, “বহিরাগত দুষ্কৃতী দিয়ে বিজেপি গ্রাম দখলের চেষ্টা করছে। পুলিশ এবং গ্রামবাসী রুখে দাঁড়ানোয় রফিক শেখের বাড়িতে বোমা মেরে পালিয়ে যায় তারা!”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এই বোমা-গুলির লড়াইকে ‘সমাজবিরোধী’ এবং ‘জনবিরোধী’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “তিন ধরে এই হামলা আসলে তৃণমূলের জমি দখলের লড়াই। এত দিন পর্যন্ত বীরভূমের এই অঞ্চল ছিল তৃণমূলের খাস গড়। সেখানে এখন বিজেপি-র জনপ্রিয়তা বাড়ছে। দলে দলে লোকজন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে আসছেন। শুধুমাত্র বিজেপি করার অপরাধেই হামলা হচ্ছে তাঁদের উপরে!”