হুদহুদের কারণে অন্ধ্র-ওড়িশায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হুদহুদের কারণে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট। এদের মধ্যে একটি এক বছরের শিশু-সহ রয়েছে ছয় এবং ১১ বছরের দু’জন। অন্ধ্র-প্রশাসন জানিয়েছে, বাড়ির ছাদ ও দেওয়াল ভেঙে এবং গাছ চাপা পড়ে রাজ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে ওড়িশায় মারা গিয়েছেন তিন জন। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ে অতি প্রবল ওই ঘূর্ণিঝড়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৪ ১৩:৪৯
Share:

হুদহুদ পরবর্তী ওড়িশার গোপালপুর সৈকত। সোমবার সকালে এপি-র তোলা ছবি।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হুদহুদের কারণে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট। এদের মধ্যে একটি এক বছরের শিশু-সহ রয়েছে ছয় এবং ১১ বছরের দু’জন। অন্ধ্র-প্রশাসন জানিয়েছে, বাড়ির ছাদ ও দেওয়াল ভেঙে এবং গাছ চাপা পড়ে রাজ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে ওড়িশায় মারা গিয়েছেন তিন জন। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ে অতি প্রবল ওই ঘূর্ণিঝড়। শক্তি কমিয়ে ওই দিন রাতেই হুদহুদ ঢুকে পড়েছিল ছত্তীসগঢ়ে। সোমবার বিকেলের দিকে উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে ঢোকার কথা তার। এর পরে একেবারে শক্তিহীন অবস্থায় বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা ওই ঘূর্ণিঝড়ের।

Advertisement

তবে প্রভাব কমতে শুরু করলেও এ দিনও ওই রাজ্যগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের দু’একটি জেলাতেও।

হুদহুদের প্রভাবে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের তিন জেলা— বিশাখাপত্তনম, শ্রীকাকুলাম ও বিজয়নগরম। তবে, বিশাখাপত্তনমে এ দিন সকাল থেকে তেমন একটা বৃষ্টি হয়নি। হাওয়ার গতিবেগও বেশ কমে এসেছে। তবে ওই দিন ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ায় এই জেলা যেন ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বয়েছে রবিবার সারা দিন ধরে। এর ফলে, চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে উপড়ে যাওয়া গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি। রাস্তায় উড়ে এসে পড়েছিল বাড়ির চালা থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং। কয়েক জায়গায় ধসে পড়েছে বাড়িও। বিভিন্ন জায়গায় রেললাইন ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দরও ঝড়-জলের প্রভাবে কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়ে। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শহরের পেট্রোল পাম্পগুলির বেশির ভাগই বন্ধ। এক নাগরিকের কথায়, “বিদ্যুৎ নেই। জল নেই। নেই দুধের জোগানও। এমনকী, পেট্রোলও পাওয়া যাচ্ছে না। বেরোনো যাচ্ছে না রাস্তাতে। এই শহরে এক দিনের জন্যও বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব!”

Advertisement

সোমবার সকাল থেকে রাজ্যে স্বাভাবিক জনজীবন ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু তাঁর মন্ত্রিসভাকে বিশাখাপত্তনমে হাজির থেকে উদ্ধারকাজের তদারকি করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরই মধ্যে আগামী মঙ্গলবার গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রাক্ এবং হুদহুদ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে চন্দ্রবাবু-প্রশাসনের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রেখেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তিনি নিজেও চন্দ্রবাবুর কাছ থেকে নিয়মিত খবরাখবর নিচ্ছেন বলে এ দিন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে উদ্ধার, ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের কাজে প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই জেলাগুলিতে কর্মরত প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে এই কাজে হাত লাগাতে হবে।

অন্য দিকে, হুদহুদের প্রভাবে একই রকম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ওড়িশা। সেখানে এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মারা গিয়েছেন তিন জন। রাজ্যের বিশেষ ত্রাণ কমিশনার পি কে মহাপাত্র জানিয়েছেন, মৃত তিন জনের নাম পূজা মল্লিক (৬), হেমন্ত মল্লিক (১১) এবং সুদুলু গরায়া (৪২)।

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ দিনও এই রাজ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। আগামী ২৪ ঘণ্টা সেই বৃষ্টি চলবে। সকাল থেকে বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে বলেও সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন