উত্তপ্ত হচ্ছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক, মৃতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়ালো

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ১৭:১৪
Share:

ইজরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের আশ্রয়স্থল। ছবি: এএফপি

যুদ্ধবিরতির জোরদার প্রয়াস সত্ত্বেও গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শুক্রবার তা ৮০০ ছাড়িয়ে গেল। সংঘর্ষ ছড়িয়েছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও। সেখানে বিক্ষোভের সময়ে ইজরায়েলি নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন।

Advertisement

৮ জুলাই থেকে গাজায় শুরু হওয়া সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৮০৯ জন প্যালেস্তিনীয় প্রাণ হারিয়েছেন। আহত প্রায় পাঁচ হাজার। প্রাণ গিয়েছে ৩৫ জন ইজরায়েলিরও। এ দিন বেইট হানৌন-এ রাষ্ট্রসঙ্ঘের একটি আশ্রয় শিবিরে হামলা চালায় ইজরায়েল। হামলায় মৃত্যু হয় ১৬ জনের। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন, এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সূত্রে খবর, আশ্রয় শিবিরগুলি সম্পর্কে সব খবর আগে থেকেই ইজরায়েলি সেনার কাছে দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া আশ্রয় শিবির থেকে আশ্রিতদের সরিয়ে নিয়ে যেতে রেড ক্রসের একটি দলও সেখানে যাচ্ছিল। হামলার সময়ে শিবিরে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা লায়লা আল শিনবাহি। এই হামলায় তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “রেড ক্রস আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাবে বলে আমরা স্কুল চত্বরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখনই ইজরায়েলি গোলা আছড়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। রক্তে আর আর্তনাদে চার দিক ভরে ওঠে।” এ নিয়ে চার বার রাষ্ট্রসঙ্ঘের আশ্রয় শিবিরের উপরে ইজরায়েলি হামলা হল। ইজরায়েলি সেনা সূত্রে খবর, এই অঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে। হামাসের হামলার জবাব দিতে গিয়ে স্কুল বাড়িটি আক্রান্ত হতে পারে। তবে হামাসের রকেট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েও স্কুলটিতে আঘাত করতে পারে বলে জানিয়েছে ইজরায়েল।

বৃহস্পতিবার গাজায় ইজরায়েলের লাগাতার হামলার প্রতিবাদে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের রামাল্লা থেকে মিছিল বের হয়। ফেসবুকে এই মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ১০০০ প্যালেস্তিনীয়র এই মিছিলটির পূর্ব জেরুজালেম পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। পথে ইজরায়েলের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে তাঁদের। সংঘর্ষে দু’জন প্যালেস্তিনীয়র মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় দু’শো জন। এই মৃত্যুর প্রতিবাদে প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস শুক্রবার ‘ডে অফ অ্যাঙ্গার’-এর ডাক দিয়েছেন। এর পরেই এই অঞ্চলে ইজরায়েল বিশেষ সতর্কতা নিতে শুরু করেছে। কাল থেকে বিখ্যাত আল-আকসা মসজিদে ৫০ বছরের কম বয়সী প্যালেস্তিনীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়েও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে। ইজরায়েল জানিয়েছে, গাজায় হামাসের সুড়ঙ্গগুলি ধ্বংস করার কাজ চলছে। হামাস রকেট ছুড়লেও তার সংখ্যা কমে এসেছে দাবি করেছে তারা। পাশাপাশি শুধুমাত্র এ দিনই হামাসের ৪০ জন জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইজরায়েল।

Advertisement

যুদ্ধবিরতির জন্য আমেরিকা আরব দেশগুলির উপরে ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে। মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরির আশা শুক্রবার কোনও সুসংবাদ পাওয়া যেতে পারে। তবে এখনও হামাস ও ইজরায়েলের মনোভাব দেখে আশু যুদ্ধবিরতির আশা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। কাতার থেকে হামাসের অন্যতম নেতা খালেদ মেশাল বলেছেন, “সীমান্তে অবরোধ করে আমাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা মানব না। এ ভাবে গাজাকে বড় কারাগারে পরিণত করা হচ্ছে। বাসিন্দারা কাজ ও চিকিৎসার জন্য কোথাও যেতে পারেন না। কেন এ ভাবে এই বৃহৎ কারাগারে প্যালেস্তিনীয়দের ধীরে ধীরে মারা হবে? এটা অপরাধ।” অবশ্য অবরোধ উঠলে মানবতার খাতিরে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি।

অন্য দিকে, শুক্রবার মানবতার খাতিরে সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইজরায়েলি ক্যাবিনেটে আলোচনা হতে পারে। সেখানে সাত দিনের জন্য ত্রাণ সামগ্রীর প্রবেশ এবং আহত ও নিহতদের উদ্ধারের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠতে পারে। তবে এই প্রস্তাবের সঙ্গে হামাসের রকেট হামলা বন্ধ রাখার শর্তও জুড়ে দেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন