ঘটনার সময় মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন কেজরীবাল। ছবি: পিটিআই।
আম আদমি পার্টি-র সভায় চোখের সামনে এক কৃষককে আত্মহত্যা করতে দেখেও সভা চালিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি বলে মেনে নিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। কৃষক আত্মহত্যার ঘটনার দু’দিন পরে, শুক্রবার, সভা চালিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি বলে তিনি গজেন্দ্রর পরিবার এবং দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান। এ দিন একটি সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘সে দিনের ঘটনায় কেউ যদি আঘাত পেয়ে থাকেন, তার জন্য আমি দুঃখিত।’’ পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান, ঘটনার দিন তাঁর এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি মাত্র ১৫ মিনিট বক্তৃতা দেন। যদিও ঘটনার দু’দিন পরে আচমকা ক্ষমা চাওয়াটা হাস্যকর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এই ঘটনাকে কেজরীবালের ‘বিলম্বিত বোধোদয়’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষমা চাইলেই অপরাধ কমে না।’’
বুধবার দিল্লির যন্তর-মন্তরে আম আদমি পার্টি-র সভা চলাকালীন কাছের একটি গাছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন রাজস্থানের কৃষক গজেন্দ্র সিংহ। আপের মঞ্চ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ওই ঘটনা ঘটায় অস্বস্তিতে পড়ে কেজরীবালের দল। ওই দিন কৃষক বঞ্চনা এবং কেন্দ্রের জমি বিলের প্রতিবাদ সভায় এসেছিলেন তিনি। জমি বিল নিয়ে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের চলতি আন্দোলনের মাঝে এক কৃষকের আত্মহত্যায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারও। বিতর্ক থামাতে টুইটারে বিবৃতি দেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। গজেন্দ্রর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার যে কৃষকদের পাশেই আছে, তা-ও জানান তিনি। ঘটনায় বিতর্ক কাটাতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন আপ নেতৃত্ব। তবে তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেশ জুড়ে কেজরীবালকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় ওঠে। এক ব্যক্তিকে চোখের সামনে আত্মহত্যা করতে দেখেও কী ভাবে তিনি নিশ্চুপ ছিলেন এবং নিজের সভা চালিয়ে গেলেন, এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল সকলের মনে। এমনকী, গজেন্দ্রর মৃত্যুতে আপ নেতাদের প্রত্যক্ষ মদতের অভিযোগ তুলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে যুব কংগ্রেস। পোড়ানো হয় কেজরীবালের কুশপুতুল।