এসএসকেএম থেকে বেরোচ্ছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
আপাতত তিনি ‘মুক্ত’!
হাসপাতাল থেকে বুধবার বাড়ি ফিরলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। এসএসকেএম থেকে এ দিন দুপুরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত কোনও সমস্যা নেই মদনবাবুর। তবে বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি মিললেও চিকিৎসকরা তাঁকে কোনও রকম মানসিক চাপ না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ছাড়া পাওয়ার পর মদন নিজে কী বলছেন?
ভবানীপুরের বাড়িতে ফিরে তিনি এ দিন বলেন, “আগের থেকে অনেকটা ভাল আছি। যদিও, ফুসফুসটা এখনও খুব একটা স্বাভাবিক হয়নি বলে মনে হচ্ছে।” সারদা কেলেঙ্কারিতে তাঁকে ইতিমধ্যেই ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। তিনি কি সে ডাকে সাড়া দেবেন? জবাবে মদনবাবু বলেন, “যা বলার সিবিআইকে বলব। যখন ডাকবে তখন দেখা করে এ বিষয়ে বলব। আমি বা আমার দল কখনও এ কথা বলিনি যে, সিবিআইকে সহযোগিতা করব না। তা যদি হত, তবে আমাদের দলের একাধিক নেতা-নেত্রী সিবিআই-এর দফতরে যেতেন না।” এর আগে গত ২১ নভেম্বর সারদা-কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মন্ত্রীকে ডেকে পাঠায় সিবিআই। কিন্তু, আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি কেন্দ্রীয় ওই তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়ে দেন, অসুস্থতার কারণে তাঁর পক্ষে ওই দিন হাজির হওয়া সম্ভব নয়। এ দিন তিনি বলেন, “আমাকে সিবিআই ডেকে পাঠালেও অসুস্থতার কারণে যেতে পারিনি। কিছুটা সুস্থ বোধ করায় আজ মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে জানতে চাই আমায় ছাড়া যাবে কি না! ওঁরা সব কিছু বিবেচনা করে হাসপাতাল থেকে আমায় ছেড়েছেন।”
গত ১৬ নভেম্বর শারীরিক অসুস্থতার কারণে মদনবাবু দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। এর পরে হঠাৎই ২০ নভেম্বর কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রায় চুপিসাড়ে এসএসকেএম-এ গিয়ে ভর্তি হন তিনি। সেখানে তাঁর শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা হয়। পিঠের যে টিউমার-এর সমস্যা নিয়ে তিনি প্রথমে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেটিরও পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয় সরকারি হাসপাতালে। সে সবের পরে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, পরিবহণমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা সন্তোষজনক। এর পরেই জল্পনা শুরু হয়, কবে ছাড়া পাবেন মন্ত্রী? শেষে পলিসমোনোগ্রাফি পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর দেখা যায়, বড় কোনও সমস্যা নেই তাঁর। এ দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, মন্ত্রী এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে তাঁকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। উদ্বেগ এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু ওষুধ দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রীতিমতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন মন্ত্রী। হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের ২১ নম্বর বেডে থেকে কয়েক দিনের এই চিকিৎসায় শেষের দিকে কার্যত তাঁর ‘ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা হয়। ঘনিষ্ঠ মহলে বেশ কয়েক বার বলেও ফেলেন, ‘হাসপাতালই তো দেখছি জেলখানা হয়ে গেল’। সে দশা থেকেই আপাতত মুক্তি মিলল মদনের।