মালদহে ধৃতের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনল না পুলিশ

ইংরেজবাজারে ধৃত রিন্টু শেখের বিরুদ্ধে মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আনল না পুলিশ। বৃহস্পতিবার রিন্টু শেখকে মালদহ আদালতে তোলা হলে তাকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অমিতাভ দাস। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮ ধারা (অপরাধমূলক কাজের জন্য বিনা অনুমতিতে ঘরে ঢোকা) এবং ৩২৬ ধারায়(গুরুতর আঘাত) মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৪ ১৭:২৩
Share:

ইংরেজবাজারে ধৃত রিন্টু শেখের বিরুদ্ধে মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আনল না পুলিশ। বৃহস্পতিবার রিন্টু শেখকে মালদহ আদালতে তোলা হলে তাকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অমিতাভ দাস। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮ ধারা (অপরাধমূলক কাজের জন্য বিনা অনুমতিতে ঘরে ঢোকা) এবং ৩২৬ ধারায়(গুরুতর আঘাত) মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার রিন্টু শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালত সূত্রে খবর, পুলিশ ১৪ দিনের হেফাজত চেয়ে আবেদন জানালেও ৮ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক। আদালতের এই নির্দেশ শোনার পরে কার্যতই ভেঙে পড়েছেন অভিযোগকারিণী। তিনি বলেন, “আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। বাবাকেও মারধর করেছিল ওরা। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হল না। আমার মৌখিক অভিযোগ রাখা হয়নি। আমি তো লেখাপড়া জানি না তাই কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না।”

Advertisement

এরই পাশাপাশি, বিজেপি ও কংগ্রেসের তরফে সব রকমের আইনি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এ দিন আদালতে অভিযোগকারিণীর হয়ে কোনও আইনজীবীই দাঁড়াননি। ওই মহিলার বক্তব্য, কোনও আইনজীবীর সাহায্য না মেলায় কী ভাবে কোথায় অভিযোগ দায়ের করা যাবে তা তিনি বুঝতে পারছিলেন না। অথচ গত বুধবারই সন্ধ্যাবেলা মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নির্যাতিতা ও তাঁর বাবাকে দেখতে গিয়ে সব রকমের আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন মালদহ জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী ও পেশায় আইনজীবী মৌসম বেনজির নূর।

ওই মহিলার হয়ে কেন কেউ দাঁড়ালেন না?

Advertisement

মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামপ্রসাদ গুপ্ত বলেন, “অভিযুক্ত ও তাঁর পরিবারের তরফ থেকে আইনজীবী নিয়োগের আবেদন না এলে কী ভাবে কেউ তাঁদের হয়ে দাঁড়াবেন?”

পুলিশ এবং আইনি টানাপড়েনের মাঝেই আজ সারা দিন মেডিক্যাল কলেজে বাবার পাশেই ছিলেন নির্যাতিতা মহিলা। তাঁর পাশে এ দিন সারাক্ষণ এক জন মহিলা পুলিশকে দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত জবানবন্দি নেওয়ার জন্য তাঁকে ইংরেজবাজার থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল। দফায় দফায় চাপ দিয়ে পুলিশ লিখিয়ে নিতে চেয়েছিল যে, রিন্টু শেখ নামে ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদেই সহবাস করেছিলেন তিনি। ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠার পরেও অভিযুক্তের সপক্ষেও একই যুক্তি পেশ করেছিলেন রাজ্যের খাদ্য পক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। ‘স্বেচ্ছা সহবাসের’ জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।

জোড়া অভিযোগ ওঠে জেলা পুলিশের বিরুদ্ধেও। প্রথমত, অভিযোগকারিণীকে রাতভর থানায় আটকে রেখে বয়ান বদলের জন্য চাপ দেওয়া। দ্বিতীয়ত, অভিযুক্তের নিরক্ষর স্ত্রীকে দিয়ে সাদা কাগজে টিপসই করিয়ে নিয়ে অভিযোগকারিণীকেই পাল্টা প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন