দাদাগিরি

বিরাটকে স্লেজিং করার দুঃসাহস দেখাও দেখি

আমার কাছে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচ আজই। যেখানে দু’টো দলের কেউ অন্যের চেয়ে এগিয়ে নেই। অকল্যান্ডে আমরা অনবদ্য একটা সেমিফাইনাল দেখলাম। কিউয়িদের অভিনন্দন যে ভাবে ওরা এত বড় একটা ম্যাচে একটা অত বড় রান সফল ভাবে তাড়া করল তার জন্য। ম্যাকালামের অসাধারণত্ব আর ডে’ভিলিয়ার্সের খুব সাদামাটা ক্যাপ্টেন্সি নিউজিল্যান্ডকে বিশ্বকাপে প্রথম বার ফাইনালে তুলল।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ২০:৪৬
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

আমার কাছে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচ আজই। যেখানে দু’টো দলের কেউ অন্যের চেয়ে এগিয়ে নেই।

Advertisement

অকল্যান্ডে আমরা অনবদ্য একটা সেমিফাইনাল দেখলাম। কিউয়িদের অভিনন্দন যে ভাবে ওরা এত বড় একটা ম্যাচে একটা অত বড় রান সফল ভাবে তাড়া করল তার জন্য। ম্যাকালামের অসাধারণত্ব আর ডে’ভিলিয়ার্সের খুব সাদামাটা ক্যাপ্টেন্সি নিউজিল্যান্ডকে বিশ্বকাপে প্রথম বার ফাইনালে তুলল।

কিন্তু আজ ক্রিকেটবিশ্ব দেখবে দু’জন খুব ভাল এবং পরিণত অধিনায়ককে। যাদের স্কিল ম্যাচের ফলের ক্ষেত্রে বিরাট ফ্যাক্টর হয়ে উঠবে। ধোনি এই পরিস্থিতিতে আগেও পড়েছে। গত আট বছরে ওর নেতৃত্বে ভারত চারটে বড় টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল ডিঙিয়েছে। ওই আত্মবিশ্বাস আর অভিজ্ঞতা এই ম্যাচে বড় ফ্যাক্টর হবে। যে জোরটা বড় ম্যাচের অনেক চাপ আর আশঙ্কা কাটিয়ে দেয়। আর সাধারণত ঠান্ডা মেজাজের ধোনি নিশ্চয়ই সেটা মাথায়ও রাখবে।

Advertisement

মাইকেল ক্লার্কের আবার এটাই প্রথম কোনও বড় সেমিফাইনাল। যতই ও দু’টো বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলে থাকুক না কেন, টিমকে নেতৃত্ব দেওয়াটা একেবারে অন্য বস্তু। ইদানীং বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বড় ম্যাচে ভারতের রেকর্ড দুর্দান্ত। কিন্তু দু’টো দলই জানে আজ একটা নতুন দিন। নতুন ম্যাচ। আর দু’টো দলেরই জেতার মতো আগুন রয়েছে।

ম্যাচটা নিয়ে প্রচুর ভবিষ্যদ্বাণী চলছে চার দিকে। কিন্তু আমি বাজি ধরতে পারি, দু’টো দলের কেউ অন্যের চেয়ে এগিয়ে নেই। দু’টো দলই ভীষণ শক্তিশালী। দু’টো দলেই অনেক ম্যাচ উইনার আছে। আর দু’দলই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে।

ফোকাসটা বরং উইকেটের দিকে। সিডনিতে বৃষ্টি হয়েছে। পিচ বেশির ভাগ সময় রয়েছে চাদরের নীচে। কিন্তু আজকাল কভারগুলো এতই ভাল যে বৃষ্টি-টিষ্টিতে উইকেটে তেমন কোনও প্রভাবই পড়ে না। অকল্যান্ডে যেমন আগের রাতে দেখলাম, ম্যাচের মধ্যেই ঘণ্টাখানেক বৃষ্টি হল কিন্তু তার পরেও প্রায় তিনশো রান সফল ভাবে তাড়া করল একটা টিম। এসসিজি-তেও একই ব্যাপার ঘটতে পারে।

ভারতের এই টুর্নামেন্টে এতটাই উঁচুদরের পারফরম্যান্স যে আজও ওদের একই টিম খেলবে। অস্ট্রেলিয়াও মনে হচ্ছে আগের ম্যাচের এগারোকে খেলাবে। দু’টো দলেরই ব্যালান্স খুব ভাল। লড়াইটা দু’টো আলাদা-আলাদা ব্যালান্সের টিমের মধ্যে, তবে সেটা দুটো দলেই খুব ভাল। অস্ট্রেলিয়ার আক্রমণে পেস বোলিংয়ের বিরাট প্রাধান্য। ভারতের আবার ওদের স্পিনারদের থেকে ভাল পারফরম্যান্সের দরকার আছে। যাদের অবশ্য টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত খুব ভাল দেখাচ্ছে।

ব্যাটিংশক্তিতে দু’দলই সমান-সমান। বড় বড় ম্যাচ উইনার রয়েছে দু’টো দলেরই হাতে। ওয়ার্নার আর ফিঞ্চের থেকে মারকাটারি ব্যাটিংয়ের প্রত্যাশা করবে অস্ট্রেলিয়া। আর ভারত তাকিয়ে থাকবে বিরাট কোহলির দিকে।

কোহলি আমার মতে এই ম্যাচে খুব ভাল মানসিকতায় থাকবে। এই অ্যাটাকের বিরুদ্ধেই টেস্ট সিরিজে অসাধারণ ব্যাটিং করেছিল ও। যে ব্যাপারটা ওকে ম্যাচ শুরুর সময় নিশ্চয়ই খুব ভাল অনুভূতিতে রাখবে। অজিরা কোহলিকে স্লেজিং করার দুঃসাহস দেখাবে না! কোহলি যত বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে ততই ওর ব্যাটিংটা খোলে। যেমনটা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেই টেস্ট সিরিজে দেখেছি।

বলা হচ্ছে, এসসিজি-তে আজ সোনালির চেয়ে নীল রং বেশি থাকবে। আর যদি একশো ওভারের শেষে মাঠের ভেতরেও নীলের মাথাই উঁচু থাকে, তার চেয়ে ভাল জিনিস আমাদের সবার কাছে আর কী হতে পারে! তবে যে যা-ই বলুক, আমি কিন্তু যত ম্যাচটা নিয়ে ভাবছি ততই আমার বিশ্বাস বাড়ছে যে, টস হওয়ার আগে পর্যন্ত ভারত-অস্ট্রেলিয়া কেউ কারও চেয়ে এগিয়ে নেই।

গুড লাক ইন্ডিয়া!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন