আগামী এক দশকের মধ্যে ভারতের বাজারের ৫% নিজেদের দখলে আনতে চায় জেনারেল মোটরস (জিএম)। সেই লক্ষ্যে এ দেশে উৎপাদন বাড়ানোর দিকে জোর দিতে চায় মার্কিন গাড়ি নির্মাতা সংস্থাটি। একই সঙ্গে ভারত থেকে অন্যান্য দেশে গাড়ি রফতানি আরও বাড়াতে নতুন লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করছে তারা।
গত কয়েক মাস ধরেই দেশে গাড়ি বিক্রির নিরিখে খুব একটা ভাল ফল করেনি জিএম। মার্চে শেষ হওয়া ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে দেশে ৫৭,৬০০টি গাড়ি বিক্রি করেছে জিএম। বাজার দখল মাত্র ১.৮%। ২০২৫-এর মধ্যে সেই পরিসংখ্যানই বাড়িয়ে ৪ লক্ষ করার লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছে সংস্থা। গত সেপ্টেম্বরেই ভারত থেকে রফতানি শুরু করেছে জিএম। সেই সংখ্যা ১.৭০ লক্ষে নিয়ে যেতেও আগ্রহী ডেট্রয়েটের এই সংস্থা। যা তখনকার উৎপাদনের প্রায় ৩০%। দেশে গাড়ির দাম কমাতে এখানে যন্ত্রাংশ উৎপাদন এবং দেশ থেকেই তা কেনা নিয়েও আগ্রহ দেখিয়েছে জিএম।
সংস্থা-কর্তা স্টিফেন জেকবি-র দাবি, কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পর থেকে ভারতে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে ফের আশার আলো দেখা গিয়েছে। তাই আগামী দিনে ভারতে জিএম-এর শেভ্রলে ব্র্যান্ডের গাড়ি বিক্রির সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও আশাবাদী তাঁরা। পাশাপাশি, পূর্বাভাস অনুসারে ২০২৫ সালের মধ্যে এখানে মোট গাড়ি বিক্রি ছাড়িয়ে যাবে ৮০ লক্ষের গণ্ডি। জাপানকে টপকে ভারতই হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ি বাজার। তখনকার কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই প্রস্তুত হতে চান তাঁরা। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নিজেদের সেই পরিকল্পনা ঘোষণা করার কথা রয়েছে জিএম-এর। যার অংশ হিসেবে এখানে নতুন গাড়ি আনার কথাও ভাবছে সংস্থা।
বিশেষজ্ঞ মহলের অবশ্য দাবি, ভারতকে পাখির চোখ করার পিছনে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায় সংস্থার গাড়ি উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি পাওয়া। গত পাঁচ বছরে সেখানের শ্রমিক পিছু খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। উৎপাদন খরচের ভিত্তিতে জাপানের সঙ্গেই এক সারিতে পৌঁছে গিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার বাজার। পাশাপাশি, শ্রমিক আন্দোলনও সেখানে কাজ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। যে কারণে সংস্থা এখন নতুন উৎপাদন কেন্দ্রের সন্ধান করছে। জেকবি নিজেই জানিয়েছেন, গাড়ি শিল্পের ক্ষেত্রে ভারত এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার। তবে এখনই দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনও কারখানা বন্ধের পরিকল্পনা তাঁদের নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সংস্থার পরিকল্পনা কার্যকর হলে সেখানে উৎপাদন এক তৃতীয়াংশেরও বেশি কমে ৩.৬৫ লক্ষে দাঁড়াতে পারে।