বড়ো জঙ্গিদের হামলায় মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৭০ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। একই সময়ে ৫-৬টি হামলা চালায় এনডিএফবি (সংবিজিৎ) সংগঠনের বড়ো জঙ্গিরা মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর অসম-বাংলা সীমানার শোণিতপুরের বাতাসিপুর, পাভৈ, হাতিজুলি এবং কোকরাঝাড়ের পাখিরিগুড়ি, উল্টাপানি, মধুপুর, সেরফাংগুড়িতে নির্বিচারে গুলি চালায়। গুলিতে ঝাঁঝরা হন অসংখ্য মানুষ। ওই দিন মৃতের সংখ্যা ৪৮ থাকলেও বুধবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০-এ। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই মহিলা এবং শিশু। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলছে দেহ উদ্ধারের কাজ। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বহু জনকে।
ঘটনার পর অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় মানস ও নামেরি জাতীয় উদ্যান। ওই দুই এলাকায় জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশির চালাতে সেনা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছে অসম পুলিশ। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষী। গোটা রাজ্যজুড়ে চূড়ান্ত সতকর্তার পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গায় কার্ফু জারি করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন দুপুরে অসম যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এ দিন জানিয়েছেন তিনি। জঙ্গিহানার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটারে তিনি এই ঘটনাকে ‘কাপুরুষোচিত কাজ’ বলেছেন। ইতিমধ্যেই ভারত-ভুটান সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। জঙ্গিহানায় নিহতদের স্মরণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় শোকজ্ঞাপন করা হয়।
এনডিএফবি দমনে রাজ্যে ইতিমধ্যেই বিশেষ অভিযান শুরুর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। এর আগে, যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে কয়েক জন সংবিজিৎপন্থী জঙ্গির। সে জন্য এনডিএফবি সশস্ত্র বদলার হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু এনডিএফবি-র হুমকি উড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী । সেই হুমকিই এ বার সত্যি করে দেখাল সংবিজিৎপন্থী জঙ্গিরা। পুলিশ সূত্রে খবর, মানস জাতীয় উদ্যানে সংবিজিৎ গোষ্ঠীর জঙ্গিদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। আগেই গোষ্ঠী সংঘর্ষের আঁচ পড়েছিল মানসের বিভিন্ন রেঞ্জে। তাদের হামলায় চলতি বছরে মৃত্যু হয় অনেকেরই।