আইএস নিয়ন্ত্রিত তেল শোধনাগারে আক্রমণ চালাল আমেরিকা

সিরিয়ায় বিমান হামলা বজায় রাখল আমেরিকা। বৃহস্পতিবারের এই বিমান হানায় সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও অংশ নেয়। কিন্তু কোবানের পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। যদিও স্থানীয় কুর্দরা জানিয়েছেন, আইএস-এর অগ্রগতি রোখা গেলেও কত দিন তাদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই অভিযানের সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল কম্যান্ড।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২০:১৪
Share:

এখন আইএস-এর অধিকারে। সিরিয়ার রাক্কার কাছে তেল আবিয়াদে। ছবি: রয়টার্স

সিরিয়ায় বিমান হামলা বজায় রাখল আমেরিকা। বৃহস্পতিবারের এই বিমান হানায় সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও অংশ নেয়। কিন্তু কোবানের পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। যদিও স্থানীয় কুর্দরা জানিয়েছেন, আইএস-এর অগ্রগতি রোখা গেলেও কত দিন তাদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

Advertisement

এই অভিযানের সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল কম্যান্ড। সেন্ট্রাল কম্যান্ড সূত্রে খবর, এ দিন সিরিয়ার ১৩টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এ দিন প্রধানত ইসলামিক স্টেট-এর (আইএস) নিয়ন্ত্রণে থাকা ছোট ছোট তেল শোধনাগারগুলিতে (মডিউলার তেল শোধনাগার) হামলা চলে। সেন্ট্রাল কম্যান্ড জানিয়েছে, এই ছোট ছোট তেল শোধনাগারগুলিতে প্রতি দিন ৩০০ থেকে ৫০০ ব্যারল তেল উত্পাদিত হয়। চোরাবাজারে ব্যারেল পিছু প্রায় ৩০ ডলার দামে তা বিক্রি করে আইএস-এর প্রতি দিন ২০ লক্ষ ডলার আয় হয়। এই অর্থই সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার করছে আইএস।

সেন্ট্রাল কম্যান্ড জানিয়েছে, ১৩টি লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ১২টিই ছিল মডিউলার তেল শোধনাগার। মায়াদিন, আবু কামাল, আল-কোইম, হাসাকে, দেইর-অল-জওর-এর মতো উত্তর সিরিয়ার একাধিক অঞ্চলে আক্রমণ করা হয়। এই আক্রমণে যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি ড্রোন ব্যবহার করা হয়। এতে ১৪ জন আইএস জঙ্গি এবং পাঁচ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। সেন্ট্রাল কম্যান্ড জানিয়েছে, হামলার পুরো ফলাফল জানা না গেলেও প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে হামলা সফল হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু তুরস্কের সীমান্ত ঘেঁষা সিরিয়ার কোবানেতে পরিস্থির উন্নতি হয়নি। কোবানের কুর্দরা জানিয়েছেন, তাঁরা আইএস-এর অগ্রগতি কিছুটা হলেও আটকাতে পেরেছেন। কিন্তু অস্ত্র এবং সামর্থ্যে তাঁরা অনেক পিছিয়ে আছেন। তাই কত দিন আইএস-কে কোবানে ঢোকা থেকে আটকে রাখা যাবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কোবানে আইএস-এর নিয়ন্ত্রণে গেলে আবার গণহত্যার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যেই কোবানের কাছের একাধিক গ্রাম আইএস-এর দখলে চলে গিয়েছে। সেই সব গ্রামে অবাধে লুটপাঠ ও অগ্নিসংযোগের একাধিক অভিযোগ এসেছে। যাঁরা ধরা পড়ছেন তাঁদের মুণ্ডচ্ছেদ করছে আইএস। ফলে আইএস-এর ভয়ে কোবানের এক লক্ষের বেশি বাসিন্দা ঘর ছেড়েছেন। এর বড় অংশ তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে। আরও অনেকে তুরস্কে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু তুর্ক ও কুর্দের দীর্ঘ দিনের বিবাদ। এ নিয়ে তুরস্কে গৃহযুদ্ধও হয়েছে। ফলে গণ্ডগোলের আশঙ্কায় তুরস্ক, সীমান্তের অধিকাংশ চেকপোস্ট বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপাশি সেখানে আরও সেনা ও ট্যাঙ্ক পাঠানো হয়েছে। কিন্তু শরণার্থীদের আসা বন্ধ হয়নি।

আইএস ছাড়া, আল-কায়দা ঘনিষ্ঠ নেতাদের দল খোরাসানের উপরেও হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। এই দলটি আমেরিকায় হামলার ছক কষছিল বলে মার্কিন সেনা জানিয়েছিল। হামলায় এই দলের নেতা মহসিন আল-ফাধলি-র মৃত্যু হয়েছে বলে খবর এলেও এখনও মার্কিন প্রশাসন তা নিশ্চিত করেনি। এ দিনই নেদারল্যান্ডস আইএস-বিরোধী অভিযানে অংশ নিতে ছ’টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠানোর কথা জানিয়েছে। বেলজিয়ামও এই জোটে অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ব্রিটেন ইরাকে বিমান হামলায় অংশ নিতে চায় বলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জানিয়েছেন। এ নিয়ে আগামী কাল ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনা হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছেন, আইএস-এর মতো জঙ্গি সংগঠন শক্তির ভাষা বোঝে। তাই এদের উপরে ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন