বিচারপর্ব। ছবি: এএফপি।
আরও একটি মামলার রায় বেরলো। এ বার আফগানিস্তানে। আফগান মহিলা ফারখুন্দাকে হত্যার দায়ে চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল আফগান আদালত। ১৯ মার্চ কাবুলে কোরান পোড়ানের মিথ্যা অভিযোগে ফারখুন্দাকে পুড়িয়ে হত্যা করে এক দল উন্মত্ত। বুধবার সেই অপরাধের সাজা ঘোষণা করল আদালাত। এই হত্যার দায়ে আট জনকে ১৬ বছরের জেলের সাজাও শুনিয়েছে আদালত। পাশাপাশি উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় ১৮ জনকে খালাসও করে দিয়েছে আদালত।
কাবুল পুলিশ সূত্রে খবর, কাবুলের প্রধান বাজারের কাছে ‘শা-দু-শামশারিয়া’ সৌধে এক তাবিজ বিক্রেতার সঙ্গে বিরোধ বেধেছিল ফারখুন্দার। ঝগড়ার মধ্যে সেই ব্যবসায়ীই ফারখুন্দার বিরুদ্ধে কোরান পোড়ানোর অভিযোগ আনে। এর পরে এক দল উন্মত্ত ফারখুন্দাকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর মৃতদেহকে গাড়িতে বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে বেশ খানিকটা নিয়ে যাওয়ার পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে তাঁর দেহ কাবুল নদীতে ফেলে দেওয়ায় হয়। হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল আফগান প্রেসিডেন্টের আবাসস্থলের খুব কাছেই।
এর পরেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফারখুন্দার হত্যার বিচার চেয়ে কাবুলের মেয়েরা পথে নামে। যা আফগানিস্তানের সামাজিক পরিবেশে বিরল ঘটনা। সমালোচনার ঝড় ওঠে বিদেশেও। অভিযোগ ওঠে, ঘটনাটি ঘটছে দেখেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এর পরে বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এনে বহিষ্কার করা হয়। উঠেপড়ে অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়। গ্রেফতারও হন বেশ কয়েক জন। শুরু হয় বিচার। ১৯ জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধেও বিচার শুরু হয়।
বিচারে গুরুত্ব দিতে তা সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারও করে আফগান সরকার। শঙ্কা ছিল ‘দুর্বল’ আফগান বিচার ব্যবস্থায় এই মামলার রায় বেরতে বেশ সময় লেগে যাবে। তবে বেশ তাড়াতাড়িই এই রায় এল। তবে আজকের রায়ে খুশি নয় ফারখুন্দার পরিবার। তাঁর ভাই জানান, আরও বেশ কয়েক জনের ফাঁসির সাজা হবে বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। পুলিশ কর্মীদের বিচারের রায় বৃহস্পতিবার পাওয়া যাবে।