ফ্যান্টম যুদ্ধবিমান। ইরাকে আঘাত হানতে এই বিমানই ব্যবহার করা হয়েছে। ছবি: এএফপি।
ইরাকের পূর্ব দিকে দিয়ালা প্রদেশে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গি ঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ করল ইরানের বায়ুসেনা। আরব থেকে প্রচারিত একটি আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল এই ভিডিও ফুটেজটি প্রকাশিত হয়েছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগ খবরটির সত্য বলে মেনে নিয়েছে। যদিও খবরটি সত্যতা স্বীকার করেনি ইরান। আমেরিকার নেতৃত্বে আইএস বিরোধী জোটে যোগদানের কথাও তীব্র ভাবে অস্বীকার করেছে ইরান।
ইরাক, সিরিয়ার মতো সুন্নি জঙ্গি সংগঠন আইএস ইরানেরও মাথাব্যথার কারণ। প্রধানত শিয়া মুসলিমদের দেশ ইরানকে শত্রুপক্ষ বলে মনে করে আইএস। তাই সিরিয়া ও ইরাকে আইএস বিরোধী অভিযানে নানা ভাবে সাহায্য করেছে ইরান। কখনও অস্ত্র দিয়েছে, কখনও ইরান নিয়ন্ত্রিত শিয়া মিলিশিয়া হিজবুল্লাকে কাজে লাগিয়েছে। ইরাককে কয়েকটি যুদ্ধ বিমানও দিয়েছিল ইরান। কিন্তু বায়ুসেনার ব্যবহার এই প্রথম। ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা গিয়েছে ইরাকের পূর্বে দিয়ালা প্রদেশে ফ্যান্টাম-৪ (এফ-৪) বিমান উড়ছে। পরে সেখানে বোমাবর্ষণও করে। পেন্টাগনের মুখপাত্র রেয়ার অ্যাডমিরাল জন কিবরি খবরটির সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে আমেরিকার নেতৃত্বে আইএস বিরোধী জোটে ইরান সামিল হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
কিন্তু খবরটির কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে ইরান। তাদের বায়ুসেনা এই ধরনের কোনও অভিযান অংশ নেয়নি বলে জানিয়েছেন ইরানী সেনার ডেপুটি চিফ অফ স্টাফস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ জাজেয়েরি। আমেরিকার নেতৃত্বে কোনও জোটেও তাঁরা সামিল হননি। উপরন্তু ইরাকের বর্তমান সমস্যার জন্য আমেরিকাকেই দায়ী বলে মনে করে ইরান। অন্য দিকে, আইএস বিরোধী জোটের আক্রমণে সাফল্য মিলছে বলে ব্রাসেলস-এ আইএস বিরোধী জোটের সম্মেলনে দাবি করেছেন মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি। তিনি জানান, ক্রমাগত আক্রমণের আইএস-এর ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। আইএস-এর পক্ষে রসদ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে এখনও অন্য দেশ থেকে আইএস যোগ দেওয়া বন্ধ করা যায়নি। এ ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে। কী ভাবে তা বন্ধ করা যায় তা নিয়েও এই সম্মেলনে আলোচনা হবে।
পাশাপাশি, লেবাননে আইএস নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। লেবাননের গোয়েন্দা দফতর সূত্রে খবর, ভুয়ো পরিচয়পত্র নিয়ে সিরিয়া থেকে লেবাননে প্রবেশ করার সময় ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে তার চার বছরের শিশুপুত্রকেও আটক করা হয়েছে বলে লেবাননের গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে। যদিও আইএস-এর তরফ থেকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। এই গ্রেফতারির পিছনে লেবানন ছাড়াও ইরাকের গোয়েন্দা সংস্থা এবং সিআইএ-র বড় ভূমিকা রয়েছে।
মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, এই মহিলা আইএস-এর শীর্ষস্তর সম্বন্ধে বেশ ওয়াকিবহাল। তাঁকে জেরা করে আইএস-এর গতিবিধি সম্পর্কে অনেক খোঁজখবর পাওয়া যাবে বলে মার্কিন প্রশাসনের ধারণা। তবে এই মহিলাই আবু বকর আল-বাগদাদির স্ত্রী কি না তা নিয়ে অনেকে এখনও নিশ্চিত নন। অন্য সূত্রের মতে, তিনি আল-বাগদাদির প্রাক্তন স্ত্রী-ও হতে পারেন।