এক জন ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি), ছ’জন ইনস্পেক্টর ও তাঁদের সঙ্গে জনা পঞ্চাশ কনস্টেবল। তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষের মুখের বাণী আটকাতে শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালত চত্বরে ওই বাহিনী মোতায়ন করে রাখলেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা। কুণালের মুখ আটকাতে এ দিনও বাহুবলের ওপরেই ভরসা রাখল কলকাতা পুলিশ।
আদালত চত্বরে ঢোকা এবং বেরনোর সময় কুণাল ঘোষের মুখ বন্ধ করতে শুক্রবার নগর দায়রা আদালতে পুলিশভ্যানের গায়ে ‘ধাঁই-ধপাধপ’ চাপড়ে বিকট আওয়াজ তুলে এবং মুখে ‘চলুন চলুন’ আওয়াজ করে ওই বাহিনী দিয়ে প্রায় রোজই কুণালের মুখ আটকাচ্ছে আইনরক্ষকেরা। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। এত কিছুর মাঝে যাতে কুণাল সরকার-বিরোধী বেঁফাস কিছু না বলে ফেলেন তাই শেষ বেলায় কার্যত বগলদাবা করে কুণালকে এ দিন জেলের গাড়িতে তুলে দেয় জনা আষ্টেক পুলিশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, কুণালের কথা যাতে সংবাদমাধ্যমের কাছে না পৌঁছয়, তাই এ দিন এই ধরনের পুলিশি ব্যবস্থা ছিল। এ সব দেখে কলকাতা পুলিশের এক কর্তার মন্তব্য, “ওই রকম পুলিশি ব্যবস্থা সাধারণত কোনও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মোকাবিলায় করা হয়।”
কুণালের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, এ দিন কুণালের শরীর ভালো না থাকায় তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খোলেননি। আদালতের ভিতরেও এ দিন তিনি চুপ ছিলেন। বরং মাঝেমধ্যেই তাঁকে দেখা গিয়েছে এজলাসের ভিতর চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে।
এর আগেও শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে আদালত চত্বরে একাধিক বার তোপ দেগেছেন কুণাল। তাঁর পথে হেঁটেই প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খানও মুখ্যমন্ত্রীকে কখনও ‘ডাকাতরানি’ বলেছেন, কখনও বলেছেন ‘মুকুল-মদন জেলে যাবে।’ ঘটনাচক্রে এ দিনই রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকে সারদা কাণ্ডে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।
এ দিন সারদা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের মামলায় সিবিআই আদালতের বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের এজলাসে হাজির করানো হয় কুণাল, সুদীপ্ত সেন এবং দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে। ওই তিন জনকে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।