নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রাজ্য সরকার সরিয়ে দিল সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের। বুধবার সকালেই নবান্ন থেকে ওই অফিসারদের বদলির কার্যকরী নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনকেও সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক যথাক্রমে অলকেশপ্রসাদ রায় এবং অরিন্দম দত্তকে স্বরাষ্ট্র দফতরের ওএসডি পদে নিয়োগ করা হয়েছে। বনশলের জায়গায় ওই জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন ওঙ্কার সিংহ মিনা। সিআইডি-র বিশেষ সুপার পদে নিয়োগ করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির এবং ভারতী ঘোষকে। ভারতীদেবী ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলারও সুপার ছিলেন। এ দিন তাঁদের জায়াগায় দায়িত্ব নিয়েছেন ওয়াকার রাজা এবং সিসরাম ঝাঝারিয়া। ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব পেয়েছেন অলোক রাজোরিয়া। তিনি বীরভূমের পুলিশ সুপার ছিলেন। তাঁর জায়াগায় দায়িত্ব নিয়েছেন রশিদ মুনির খান। অন্য দিকে পুলিশ ডাইরেক্টরেটে বদলি হলেন বর্ধমান এবং মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হুসেন মির্জা এবং রাজেশ যাদব। তাঁদের জায়গায় ওই দুই জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন মিরাজ খালিদ এবং রূপেশ কুমার।
গত সোমবার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে এক জেলাশাসক, দু’জন অতিরিক্ত জেলাশাসক-সহ পাঁচ জেলার পুলিশ সুপারকে বদলির নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জানায় কমিশন। এর পরই ‘নির্দেশ মানা হবে না’ বলে নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকাশ্য জনসভায় তিনি বলেন, “একটাও অফিসারকে সরাব না। আই চ্যালেঞ্জ ইলেকশন কমিশন।” এর পর রাজ্যের তরফে নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয় নির্বাচন কমিশনের কাছে। মঙ্গলবার সে আর্জি খারিজ করে বুধবার সকালের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর করতে ফের রাজ্যকে জানায় কমিশন। ওই দিন রাতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, কমিশনের নির্দেশ মেনেই সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বদলি করা হবে। পাশাপাশি ভোট মিটে গেলে ওই সব অফিসারদের ফের পুরনো পদে ফিরিয়ে আনা হবে বলেও জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার সকালে নবান্ন থেকে বদলির এই নির্দেশ জেলাস্তর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ায় কমিশন-রাজ্য সংঘাতে আপাতত ইতি পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।