ছবি: রয়টার্স।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৬৪ রানে জিতল অজিরা। রবিবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শ্রীলঙ্কাকে বধ করে আপাতত সমালোচকদের মুখ বন্ধ করলেন অজি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। আফগানদের বিরুদ্ধে সহজ জয়ের পর শ্রীলঙ্কাই ছিল তাঁদের গলার কাঁটা। গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে উঠতে গেলে এই গলার কাঁটাকে উপড়ে ফেলাই ছিল অজিদের মূল লক্ষ্য। লক্ষ্যপূরণ হল বটে, তবে খুব একটা সহজে নয়। এ দিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে অজিরা। শ্রীলঙ্কার পেসারদের সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলেন ফিঞ্চ-ওয়ার্নাররা। এ দিন ক্রিজে বেশি ক্ষণ টিকতে পারেনি ওপেনিং জুটি। ৯ ওভারের মধ্যেই ২ উইকেট খোয়ায় অস্ট্রেলিয়া। ফিঞ্চ এবং ওয়ার্নার ব্যাক্তিগত ২৪ ও ৯ রানে আউট হন। ওপেনিং জুটি প্রথম দশ ওভারের মধ্যেই পড়ে যাওয়ায় বেশ চাপে পড়ে যায় অজিরা। ওয়ার্নার-ফিঞ্চ জুটি সফল না হলেও এ দিন ম্যাক্সওয়েল, স্মিথ এবং ওয়াটসনের পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। অধিনায়ক ক্লার্কও উইকেটে মুখ গুঁজে পড়েছিলন। কারণ এ দিন ম্যাচ জেতা ছিল তাঁর কাছে একটা মর্যাদা ও সম্মানের লড়াই। অজি দলে এ দিন দু’টি পরিবর্তন করা হয়। হ্যাজেলউড ও মিচেল মার্শের বদলে আনা হয় ওয়াটসন ও দোহার্তিকে। আফগানদের বিরুদ্ধে ওয়াটসনকে না খেলানো নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেই ঝুঁকি নিতে চায়নি অজি নির্বাচকরা। মাঠে নেমে দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দূরন্ত পারফরম্যান্স করেন ওয়াটসন। বরাবর তিনি যেমনটা করে থাকেন। তবে এ দিনের ম্যাচে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় ছিল ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিং। যে ভাবে দলের চাপের মুখে শ্রীলঙ্কাকে তুলোধোনা করল তা অবর্ণনীয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হল, এই সিডনি গ্রাউন্ডেই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দ্রুততম শতরান করেছেন তিনি। ৫১ বলে শতরান করেন তিনি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এই মাঠেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৫২ বলে শতরান করেছিলেন ডি’ভিলিয়ার্স। ৬ উইকেট হারিয়ে অজি ইনিংস শেষ হয় ৩৭৬ রানে। একটা সময় মনে হয়েছিল রানের গণ্ডি ৩০০ ছাড়াবে না। কিন্তু এ দিন স্মিথ, ক্লার্ক, ওয়াটসন এবং বিশেষ করে ম্যাক্সওয়েল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শ্রীলঙ্কাকে রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
রানের পাহাড় মাথায় নিয়ে শ্রীলঙ্কা ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই থিরিমানের উইকেট হারায়। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরানের নায়ক এ দিন ব্যাটে ছিলেন ফ্লপ। মাত্র ১ রানেই আউট হন তিনি। এর পর দিলশান-সঙ্গাকারা জুটি দলকে টেনে নিয়ে যান। এ দিন জয়বর্ধনের ব্যাটও তেমন কথা বলেনি। স্টার্ক-জনসনের পেস আক্রমণ এক দিকে, এবং অন্য দিকে ফকনারের ঘূর্ণিতে নাজেহাল হয় শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। সঙ্গাকারা এ দিনও শতরান করেন। এই বিশ্বকাপে পর পর তিনটি শতরান করলেন তিনি। কিন্তু এ দিন তাঁর শতরান ফিকে হয়ে যায় অজিরা জয় ছিনিয়ে নেওয়ার পর। যে গলার কাঁটাকে উপড়ে ফেলতে অস্ট্রেলিয়া শিবির ত্রস্ত ছিল, এ দিন ৬৪ রানে ম্যাচ জিতে নিয়ে আপাতত স্বস্তির আবহাওয়া অজি শিবিরে। এ ছাড়াও এই ম্যাচ জেতার পর গ্রুপে তারা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল। তৃতীয় স্থানে চলে গেল শ্রীলঙ্কা।