জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে পাক হামলা অব্যাহত, নিহত ৫ ভারতীয়

জম্মু-কাশ্মীরের অরনিয়া সেক্টরে পাক সেনার গুলিতে নিহত হলেন দুই মহিলা ও এক নাবালিকা-সহ ৫ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছেন ২৯ জন। এঁদের মধ্যে এক জন বিএসএফ জওয়ানও রয়েছেন। সেনা সূত্রে খবর, ২০০৩ সালে সংঘর্ষবিরতি চুক্তির পর এটা সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা। অরনিয়া সেক্টরের বিএসএফ চৌকি লক্ষ্য করে রবিবার গভীর রাত থেকে অনবরত মর্টার হামলা ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি ছুড়তে থাকে পাক রেঞ্জার্সরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ১০:৫৫
Share:

আরনিয়ায় পাক সেনার মর্টার হামলার নমুনা দেখাচ্ছেন এক গ্রামবাসী। ছবি: পিটিআই।

জম্মু-কাশ্মীরের অরনিয়া সেক্টরে পাক সেনার গুলিতে নিহত হলেন দুই মহিলা ও এক নাবালিকা-সহ ৫ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছেন ২৯ জন। এঁদের মধ্যে এক জন বিএসএফ জওয়ানও রয়েছেন। সেনা সূত্রে খবর, ২০০৩ সালে সংঘর্ষবিরতি চুক্তির পর এটা সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা।

Advertisement

অরনিয়া সেক্টরের বিএসএফ চৌকি লক্ষ্য করে রবিবার গভীর রাত থেকে অনবরত মর্টার হামলা ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি ছুড়তে থাকে পাক রেঞ্জার্সরা। আর এস পুরা সেক্টরেও গুলি চালায় তারা। সেনার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মর্টার হামলার তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, সীমান্ত থেকে চার কিলোমিটার দূরের বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে তা পড়ে। সূত্রের খবর, সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলি থেকে ইতিমধ্যেই বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সোমবার সকালেও পুঞ্চের ভীম্বের গলি লক্ষ্য করে গুলি চালায় পাক সেনারা।

এর মধ্যেই রাজ্যের তঙ্গধার সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় তিন জঙ্গিকে গুলি করে হত্যা করেছে জওয়ানরা। তাদের কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।

Advertisement

গত পাঁচ দিনে এই নিয়ে এগারো বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে পাক সেনা। পুঞ্চের বলনোই, মনকোট এবং সাবজিয়াতে রবিবার সকাল থেকেই পাক সেনারা গুলি ও মর্টার হামলা চালায়। মেন্ধর সেক্টেরও কোনও প্ররোচনা ছাড়াই হামলা চালায় তারা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় জওয়ানরাও। রবিবার বিকেল পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু রাত থেকে হামলার মাত্রা ফের বাড়তে থাকে। পাক রেঞ্জার্সদের গুলি ও মর্টার হামলায় নিহত হন পাঁচ গ্রামবাসী।

বলনোই এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় সেনা টহলের সময় রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণ ঘটায় পাক সেনারা। তাতেই মৃত্যু হয় এক জওয়ানের। আহত হন আরও এক জওয়ান। রবিবারও ওই এলাকা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পাক রেঞ্জার্সরা।

গত ৩ অক্টোবর নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কাশ্মীরের গুলমার্গে এবং জম্মুর পুঞ্চ সেক্টরে পাক সেনাদের গুলিতে নিহত হয় ছ’বছরের এক শিশু। আহত হন ছয় গ্রামবাসী।

গত ১ ও ২ অক্টোবরেও পুঞ্চ সেক্টরে পাক রেঞ্জার্সদের হামলায় আহত হয়েছিলেন আরও ছ’জন। গত কয়েক মাসে একশো বারেরও বেশি সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে পাক সেনা।

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের পর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন নিয়ে সোমবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের এখনই সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন বন্ধ করা উচিত্। তাদের বোঝা উচিত্ ভারতেও কিন্তু পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।” তিনি আরও জানান, কেন্দ্র সমস্ত পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। জম্মু-কাশ্মীর সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। অন্য দিকে, বিজেপি নেতা মুক্তার আব্বাস নকভির প্রতিক্রিয়া, “পাকিস্তান বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। এ ধরনের কাজে মদত দেওয়া কিন্তু সে দেশের পক্ষে ভাল নয়।”

কংগ্রেস ও বিজেপি দু’পক্ষই পাকিস্তানের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের মতে, বিষয়টি খুবই ‘গুরুতর’। এখনই এটা বন্ধ হওয়া উচিত্।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন