তেলের দাম কমায় সঙ্কটে রাশিয়ার অর্থনীতি

কারও পৌষ মাস। কারও সর্বনাশ। তেলের দাম পড়ায় ভারতের আমনাগরিকের কিছুটা স্বস্তি মিললেও মহা সঙ্কটে পড়েছে রাশিয়া। হু হু করে কমছে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের বিনিময় হার। গত কয়েক দিনে তা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে। এর ধাক্কা লেগেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি স্টক একচেঞ্জে। অবস্থা এমনই যে অ্যাপল তার নতুন আইফোন রাশিয়ার বাজারে আপাতত ছাড়ছে না।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ২০:১৯
Share:

মস্কোয় সাংবাদিক বৈঠকে পুতিন। ছবি: রয়টার্স

কারও পৌষ মাস। কারও সর্বনাশ। তেলের দাম পড়ায় ভারতের আমনাগরিকের কিছুটা স্বস্তি মিললেও মহা সঙ্কটে পড়েছে রাশিয়া। হু হু করে কমছে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের বিনিময় হার। গত কয়েক দিনে তা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে। এর ধাক্কা লেগেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি স্টক একচেঞ্জে। অবস্থা এমনই যে অ্যাপল তার নতুন আইফোন রাশিয়ার বাজারে আপাতত ছাড়ছে না।

Advertisement

তবে একে সঙ্কট বলতে রাজি নন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার বছরের শেষ সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এই দাবি করেন। সময় কঠিন হলেও রাশিয়া এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে বলে তাঁর আশা। পাশাপাশি, অর্থনীতির এই হালের জন্য পশ্চিমী বিশ্বের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছেন তিনি।

রাশিয়ার রাজস্বের প্রায় ৫০ শতাংশ আসে তেল বিক্রি করে। রাশিয়ার রফতানি থেকে আয়ের ৬৮ শতাংশ আসে তেল বেচে। এর মধ্যে ৩৩ শতাংশ আসে ইউরোপে অপরিশোধিত তেল বেচে। ফলে, বেশ কয়েক দিন ধরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমায় প্রবল চাপে রাশিয়ার অর্থনীতি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জারি করা বিবিধ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। ফলে শুরু হয় রুবলের বিনিময় হারের পতন। রুবলের দর ধরে রাখতে এগিয়ে আসে রাশিয়ার সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক। নিজেদের সঞ্চয়ে থাকা ডলার বেচতে থাকে। রাশিয়ায় সুদের হার ৬.৫ শতাংশ বেড়ে গিয়ে ১৭ শতাংশে পৌঁছয়। তার পরেও রুবলের দাম বিশেষ বাড়েনি। এ দিন পুতিন সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের সেই কাজের প্রশংসা করেছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের কাছে ৪১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার গচ্ছিত রয়েছে। ফলে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।

Advertisement

কিন্তু পুতিনের আশ্বাসের পরেও রাশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে শুধু বিশ্ব নয়, শঙ্কা ছড়িয়েছে সে দেশেও। সামনেই ক্রিসমাস। এই সময়ে এমনিতেই বিক্রি বাড়ে। সঙ্কটের আশঙ্কায় এ বার সে বিক্রি বেশ বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে গাড়ি ও ঘরের জিনিসপত্রের বিক্রি বেশি বেড়েছে। পাশাপাশি সরকারি জনকল্যাণমূলক নানা কাজকর্ম, বিশেষ করে পেনশন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থা চললে জনকল্যাণমূলক কাজে কাটছাঁটের আশঙ্কা রয়েছে বলে পুতিনও স্বীকার করেন। এতে ব্যাহত হতে পারে বৃদ্ধিও। পুতিনের মতে, এর বড় কারণ তেল বিক্রি থেকে আয়ের উপরে রাশিয়ার অতিরিক্ত নিভর্রশীলতা। তবে দু’বছরের মধ্যে এই অবস্থা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে তাঁর দাবি। কিন্তু এর মধ্যেই এ দিন ক্রাইমিয়াতে বিনিয়োগ এবং ব্ল্যাক সি-তে তেল অনুসন্ধানের উপরে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছে আমেরিকাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন