ধূপগুড়িতে ডিএসও-র বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
হীরকজয়ন্তী বর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান বদলে গেল প্রতিবাদ সভায়!
শোভাযাত্রার পরিবর্তে সোমবার সকালে স্কুল থেকে বের হল প্রতিবাদ মিছিল। টানা দু’মাসের প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল ধূপগুড়ি মল্লিকপাড়া হাইস্কুলের হীরকজয়ন্তী বর্ষের অনুষ্ঠান। এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরেও নানা পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। যদিও রবিবার সকালে একাধিক ক্ষতচিহ্ন সমেত স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুরো পরিবেশটি বদলে যায়। ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। ময়নাতদন্তের পরে রবিবার রাতে শ্মশানে ছাত্রীর দেহ পৌঁছনোর আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সোমবার থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে বটে, তবে তা হবে প্রতিবাদ অনুষ্ঠান।
সেই মতো অনুষ্ঠানের মঞ্চ বদলে যায় প্রতিবাদের মঞ্চে। আনন্দ দিবসের নাম বদলে রাখা হয় প্রতিবাদ দিবস। মঞ্চের নাম বদলে রাখা হয় ছাত্রীর নামে। এ দিন সকালে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড, পোস্টার, ব্যানার নিয়ে গ্রামে মিছিল করে। মিছিলের শেষে স্কুলে হয় স্মরণসভা।
এ দিন সকালে প্রতিবাদ মিছিলে ‘সীমাহীন নৃশংসতা’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পোস্টার দেখা গিয়েছে। স্কুলের মিছিল হলেও বাসিন্দাদের অনেকেই রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে মিছিলে ঢুকে পড়েছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতকুমার দে বলেন, “নানা উৎসবের আয়োজন ছিল। দু’টি মাঠে দু’টি মঞ্চ তৈরি করা হয়। ছাত্রীর খুনের ঘটনা শোনার পরে প্রথমে অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছিল। পরে সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, অনুষ্ঠান মঞ্চকেই প্রতিবাদ মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। বুধবার পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ চলবে।” ঘটনায় হতবাক সহকারী প্রধান শিক্ষক রাজেন্দ্রনাথ রায়, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য প্রতুলচন্দ্র রায়েরাও।
ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ধূপগুড়ি ব্লকে ছাত্র ধর্মঘট ডেকেছিল এসএফআই। এ দিন ব্লকের বেশির ভাগ স্কুল-কলেজই বন্ধ ছিল। দুপুরে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে শহরে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ডিএসও। ঘটনার প্রতিবাদে জলপাইগুড়িতে এসএফআই, শিলিগুড়িতে ডিএসও বিক্ষোভ দেখায়। ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পরে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ধূপগুড়ি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র অমিত রায়কে গ্রেফতার করে।