মুলতুবির পর কক্ষ ছাড়ছেন সাংসদেরা। ছবি:পিটিআই।
আগরায় ধর্মান্তকরণের অভিযোগ নিয়ে বৃহস্পতিবার ফের উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। এ দিন অধিবেশন শুরুর মুখেই ওয়েলে নেমে প্রবল বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। তুমুল হইহট্টগোলের মুখে বেশ কিছুক্ষণের জন্য অধিবেশন মুলতুবি করে দিতে বাধ্য হন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। ফের অধিবেশন শুরু হলেও ছবিটা পাল্টায়নি। একই ভাবে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিরোধী সাংসদেরা। ফলে এ দিন দুপুর পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি রাখেন স্পিকার।
এ দিন সংসদে বিএসপি, কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বাম দলগুলি ধর্মান্তকরণের এই ঘটনাকে অসাংবিধানিক ও বেআইনি তকমা দিয়ে মিলিত ভাবে প্রতিবাদে সরব হয়। তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিল করার ডাক দেন আরজেডি এবং আপের সাংসদেরাও। ‘নিয়মবিরুদ্ধ’ বলে এই প্রস্তাব খারিজ করে দেন স্পিকার। সাংসদদের নিজেদের আসনে ফিরে যেতেও বলেন তিনি। যদিও এই কথায় কান দেননি সাংসদেরা। জিরো আওয়ারে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে বলেও জানান তিনি। যদিও বিরোধীরা সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। সংসদীয়মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডুও আলোচনার কথা বলেন। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। ধর্মান্তকরণ কাণ্ডে আরএসএস-এর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জবাবদিহি চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। “হিন্দু, মুসলিম, শিখ ভাই ভাই”, “মোদী সরকার হোঁশ মে আও” ইত্যাদি স্লোগানে সরব হন তাঁরা। এর জেরে সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে কোনও প্রসঙ্গেই আলোচনা করা সম্ভব হয়নি।
গত সোমবার আগরার এক বস্তিতে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ ওঠে। এমন অভিযোগও করা হয়, বিভিন্ন সরকারি সুযোগসুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ধর্মান্তকরণে বাধ্য করা হচ্ছে। এই নিয়ে বুধবার রাতেই একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। যদিও সরকারের তরফে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এই নিয়ে যা করার উত্তরপ্রদেশ সরকার করবে। গতকালও সংসদের অধিবেশনে সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি বলেছিলেন, “যা করার রাজ্য করবে। রাজ্যের আইনকানুন নিয়ে কেন্দ্রের কিছু করার থাকতে পারে না।” শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই আরএসএস-এর নাম জড়ানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এ দিন অধিবেশন চলাকালীন লোকসভার কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খার্গে বলেন, “এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জেরে দেশের একতা নষ্ট হতে পারে।” বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, “এই বিষয়ে সরকার আলোচনায় বসতে রাজি আছে। বিষয়টি নিয়ে সংগঠিত আলোচনার প্রয়োজন আছে।” আলোচনা না করে সভা ভণ্ডুল করে দেওয়াটা কোনও কাজের কথা নয় বলেও জানান তিনি। তাঁর কথায়, বিষয়টিতে রাজনৈতিক রং লাগানো হচ্ছে। দেশের নিরাপত্তা এবং ঐক্যের উপর বিষয়টি কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি করেন তিনি। সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো মুলায়ম সিংহ যাদবও কিছু বলার চেষ্টা করেন। তবে তাঁর কোনও কথা শোনা যায়নি।