বোমার ঘায়ে জখম বীরভূমের সেই পুলিশকর্মীর মৃত্যু

পুলিশকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। কর্মীদের ‘চাঙ্গা’ করতে যিনি এই পরামর্শ দিয়েছিলেন ঘটনাচক্রে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি সেই অনুব্রত মণ্ডলের জেলাতেই জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে বোমা মারা হয় এক পুলিশ অফিসারকে। সোমবার সকালে মারা গেলেন বোমার আঘাতে গুরুতর জখম দুবরাজপুর থানার সেই টাউন ওসি অমিত চক্রবর্তী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৪ ১৫:৫২
Share:

পুলিশকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। কর্মীদের ‘চাঙ্গা’ করতে যিনি এই পরামর্শ দিয়েছিলেন ঘটনাচক্রে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি সেই অনুব্রত মণ্ডলের জেলাতেই জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে বোমা মারা হয় এক পুলিশ অফিসারকে। সোমবার সকালে মারা গেলেন বোমার আঘাতে গুরুতর জখম দুবরাজপুর থানার সেই টাউন ওসি অমিত চক্রবর্তী। বুধবার সকালে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। গত ৩ জুন রাতে বীরভূম জেলায় একশো দিনের কাজে একটি পুকুর সংস্কারকে কেন্দ্র করে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে বিবাদ মেটাতে গিয়ে বোমার হামলায় মারাত্মক জখম হন বছর তিরিশের ওই পুলিশ অফিসার। বোমার আঘাতে তাঁর পেটের বাঁ দিকের অংশ প্রায় উড়ে যায়।

Advertisement

ওই দিন রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁকে দুর্গাপুরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেশ কয়েক বার অস্ত্রোপচার করার পরও তাঁর অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। এ দিন সেখানেই মৃত্যু হয় ওই পুলিশ অফিসারের। এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গত ৪ জুন মোট ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা শেখ আলিমেরও নাম রয়েছে।

কী হয়েছিল ওই দিন?

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোপালপুর গ্রামের একটি পুকুরে ১০০ দিনের কাজে মাটি কাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমস্যার শুরু। ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করে তাঁদের অনেকেই আগে টাকা পাননি। দাবি ছিল, আগের টাকা মেটানোর পরেই ওই পুকুরটি সংস্কার করা হোক। কিন্তু সেই দাবি না মেনে গ্রামের বাইরের জব কার্ডধারীদের নিয়ে এসে পুকুরের মাটি কাটার কাজ শুরু হতেই প্রতিবাদ করেন তাঁরা। ঘটনাটি দুবরাজপুরের বিডিও কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হলে তিনি মাটি কাটার কাজ তখনকার মতো বন্ধ রাখতে বলেন।

তৃণমূল শাসিত যশপুর পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে সিপিএমের ক্ষমতা এখনও বেশি বলে মত স্থানীয় বাসিন্দাদের। অন্য দিকে, রাস্তার উল্টোদিকে থাকা আউলিয়া গ্রামের তৃণমূলের প্রভাব তুলনায় বেশি। এই নিয়ে একটা চাপা উত্তেজনা ছিলই। বিডিওর নির্দেশে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, তার দায় নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়। দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। ওই দিন রাতে দু’পক্ষেরই কর্মী-সমর্থকেরা এলাকায় জড়ো হন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে অমিতবাবুর নেতৃত্বে হাজির হয় দুবরাজপুর থানার পুলিশ। সেই সময়ে হঠাৎই ওই টাউন ওসিকে লক্ষ্য করে বোমার ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা সাব ইনস্পেক্টর অমিত চক্রবর্তী ২০০৮ সালে পুলিশে যোগ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন