বিনা টিকিটে চিড়িয়াখানায় ঢুকতে চাওয়া নিয়ে বচসার জেরে এক নিরাপত্তারক্ষীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার আলিপুর থানায় এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কার্তিকবাবু যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “গত দু’মাস আমি চিড়িয়াখানামুখোই হইনি। টেলিভিশনের খবর দেখে বিষয়টি আমাকে এক জন জানিয়েছেন। এ বিষয়ে এর বেশি আমি কিছু জানি না।”
আহত অবস্থায় ওই নিরাপত্তাকর্মী মহম্মদ আমিরকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আনা হয় বলে তাঁর পরিবারের দাবি।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। ওই দিন সকালে আলিপুর চিড়িয়াখানায় নতুন একটি সাপের ঘরের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সকাল সাড়ে ১১টা তাঁর কনভয় সেখানে পৌঁছয়। চিড়িয়াখানার কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রাকেশ সিংহের অভিযোগ, “প্রধান গেট দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় ঢুকে যাওয়ার পরে এক দল তৃণমূল সমর্থক ‘আমরা কার্তিকদার লোক’ পরিচয় দিয়ে ওই গেট দিয়েই ভেতরে ঢুকতে চান। নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। তাঁদের টিকিট কেটে নির্ধারিত গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতে বলা হয়।” এর পরই মহম্মদ আমির-সহ অন্য নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ওই তৃণমূল কর্মীদের বচসা বাধে। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। তখনকার মতো গণ্ডগোল মিটে গেলেও রাকেশবাবুর অভিযোগ, “চলে যাওয়ার সময় ‘এর ফল ভাল হবে না’ বলে কার্তিকবাবুর অনুগামীরা শাসিয়ে যায়।”
রাকেশবাবু জানান, ছুটির পর বিকেল ৫টা নাগাদ মহম্মদ আমির চিড়িয়াখানার উল্টো দিকে তাঁর কোয়ার্টারে ফিরছিলেন। তাঁর অভিযোগ, সেই সময় তিনটি গাড়ি করে সেখানে হাজির হন কার্তিকবাবুর অনুগামীরা। আমিরকে অনুসরণ করে তাঁর কোয়ার্টার অবধি পৌঁছনোর পর তাঁকে হকি স্টিক দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। থানায় অভিযোগে জানানো হয়, আমিরকে রিভলভারের বাট দিয়েও আঘাত করা হয়েছে। তাঁকে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যান ওই তৃণমূল সমর্থকেরা।
এর পর আহত ওই নিরাপত্তারক্ষীকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেড নেই বলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে মহম্মদ আমিরকে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাকেশবাবুর দাবি, এ দিন সকালে আলিপুর থানায় কার্তিকবাবুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।