মস্তিষ্কের অবস্থান বোঝার প্রক্রিয়ার রহস্য সমাধানে মিলল শারীরবিদ্যার নোবেল

আমরা কোথায় আছি কী ভাবে জানতে পারি? কী ভাবেই বা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাই? কী ভাবে এক বার ঘুরে আসা পথে আবার ফিরে যেতে পারি? মোবাইল-এর ‘জিপিএস ব্যবস্থা’-র মতো কিছু কি আছে আমাদের শরীরে? এই রহস্যের উত্তর খুঁজে ২০১৪-এ শারীরবিদ্যায় নোবেল পেলেন জন ও’কিফ এবং গবেষক দম্পতি মে-ব্রিট ও এডভার্ড মোজের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ১৭:৫৫
Share:

গবেষক দম্পতি: মে-ব্রিট এবং এডভার্ড মোজের।

আমরা কোথায় আছি কী ভাবে জানতে পারি? কী ভাবেই বা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাই? কী ভাবে এক বার ঘুরে আসা পথে আবার ফিরে যেতে পারি? মোবাইল-এর ‘জিপিএস ব্যবস্থা’-র মতো কিছু কি আছে আমাদের শরীরে? এই রহস্যের উত্তর খুঁজে ২০১৪-এ শারীরবিদ্যায় নোবেল পেলেন জন ও’কিফ এবং গবেষক দম্পতি মে-ব্রিট ও এডভার্ড মোজের।

Advertisement

উপরের প্রশ্নগুলি নিয়ে প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু করেছিলেন শারীরবৃত্তীয় মনোবিজ্ঞানের গবেষক জন ও’কিফ। ১৯৭১-এ তিনি এই রহস্যের খানিকটা উত্তর খুঁজে পান। ইঁদুরের উপরে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন তিনি। ইঁদুরকে তিনি স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে দিয়ে দেখলেন, যখন কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় ইঁদুরটি দাঁড়িয়ে যাচ্ছে তখন মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস-এর কিছু কোষ উজ্জীবিত হচ্ছে। আবার ইঁদুরটি যখন অন্য জায়গায়, তখন উজ্জীবিত হচ্ছে সেই হিপোক্যাম্পাস-এরই অন্য অংশের কোষ। এর থেকে তাঁর ধারণা হয়, জায়গা বদলের কথা মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কোষে জমা হচ্ছে। কোষগুলির নাম দিলেন তিনি ‘প্লেস সেল’। এবং জানালেন, এ ভাবে মস্তিষ্কে শুধু তথ্য জমাই হয় না, একই সঙ্গে পারিপার্শ্বিকের মানচিত্রও সেখানে তৈরি হয়। আসলে ‘প্লেস সেল’-এর নানা সমন্বয়ে তৈরি হয় প্রতিটি মানচিত্র।

জন ও’কিফ

Advertisement

রহস্যের বাকি উত্তর এল ২০০৫-এ। উত্তর পেলেন গবেষক দম্পতি, মে-ব্রিট এবং এডভার্ড মোজের। এ বারও পরীক্ষা ইঁদুরের উপরে। তাঁরা দেখলেন ইঁদুর যখন কোনও নির্দিষ্ট জায়গা দিয়ে যাচ্ছে মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস-এর কাছেই এন্টোরহিন্যাল কর্টেক্স-এর একটি অংশ উজ্জ্বীবিত হচ্ছে। এন্টোরহিন্যাল কর্টেক্স-এর এই উজ্জ্বীবিত অংশগুলি ষড়ভুজ গঠন করছে। একে গ্রিড বলে। তাঁরা এর নাম দিলেন ‘গ্রিড সেল’। প্রতিটি ‘গ্রিড সেল’ ইঁদুরের চলাফেরার একটি নির্দিষ্ট পথকে চিহ্নিত করে।

এই ‘প্লেস সেল’ আর ‘গ্রিড সেল’ মিলিত ভাবে প্রাণীদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে। তিন গবেষকের এই তত্ত্বকেই এ বার নোবেল পুরস্কার দেওয়া হল। স্বাভাবিক ভাবেই পুরস্কার দু’ভাগে ভাগ হল। এক ভাগ পেলেন আমেরিকা ও ব্রিটেনের যৌথ নাগরিক জন ও’কিফ। তিনি এখন ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডন-এর ‘সাইনসবুরি ওয়েসকাম সেন্টার ইন নিউর‌্যাল সার্কিটস অ্যান্ড বিহেভিয়র’-এর ডিরেক্টর। অন্য ভাগ পেলেন নরওয়ের মোজের দম্পতি। এর মধ্যে মে-ব্রিট মোজের এখন ট্রন্ডহেইম-এর ‘সেন্টার ফর নিউর‌্যাল কম্পিউটেশন’ ডিরেক্টর। তাঁর স্বামী এডভার্ড মোজের ট্রন্ডহেইম-এরই ‘কাভিল ইন্সস্টিটিউট ফর সিস্টেমস নিউরোসায়েন্স’-এর ডিরেক্টর।

ছবি: এএফপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন