শহরে তৃণমূলের পাল্টা মিছিল। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
রাজ্যপালের আশ্বাসে শনিবার অবস্থান-বিক্ষোভ ওঠার পরে মনে করা হয়েছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা কাটতে চলেছে। কিন্তু সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্যের সুর মিলল না। রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কাছে ক্লাস বয়কট তুলে নেওয়ার আবেদন করলেও তা প্রত্যাখান করেন আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, উপাচার্য ইস্তফা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস বয়কট চলবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটানোর আবেদন করা ছাড়াও সোমবার রেজিস্ট্রার আশ্বাস দেন, আহত ছাত্রছাত্রীদের চিকিত্সার খরচ বহন করা হবে। ছাত্রছাত্রীদের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়, ৩৬ জনের বিরুদ্ধে করা এফআইআর তুলে নিতে হবে।
এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠকে তাঁদের পরবর্তী কর্মসূচিও ঘোষণা করেন ছাত্রছাত্রীরা। আগামী বুধবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে নাগরিক সম্মেলন আহ্বান করা ছাড়াও বৃহস্পতিবার লালবাজার অভিযান করবেন তাঁরা। সেখানে স্মারকলিপিও জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বুধবারের নাগরিক সম্মেলনে যোগদানের জন্য শহরের বিশিষ্টজন-সহ প্রাক্তনীদের কাছে আবেদন করেছেন ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়া, ওই দিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা একশোটি শহরের প্রাক্তনীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
এই আবহের মধ্যেই এ দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে এক ছাত্রীর যৌন নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গড়ল রাজ্যে সরকার। এ দিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মূলত শিক্ষাবিদদের নিয়ে গঠিত এই কমিটি নিয়েও আপত্তি তুলেছেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের দাবি, কমিটিতে মানবাধিকারকর্মী থেকে শুরু করে মনোবিদও রাখতে হবে।
যাদবপুর নিয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এই তরজা চলছে, সে সময় চত্বরের বাইরে এই ইস্যুতেই মিছিল করল শাসকদল। তবে অ্যাকাডেমি থেকে রাজভবন পর্যন্ত তৃণমূলের সেই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন মূলত স্কুলপড়ুয়া এবং তৃণমূলের ব্লক এবং জেলাস্তরের কর্মীরা। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে স্মারকলিপিও জমা দেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা।