এগারো তলার ছাদে একটি গুদামঘর। সেই ঘরে ঢুকেই চমকে গেলেন ইডি-র তদন্তকারীরা। সেখানে থরে থরে রাখা রয়েছে দামি দামি কম্পিউটার, ক্যামেরা-সহ চ্যানেল চালানোর বিভিন্ন জিনিসপত্র। সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার সরঞ্জাম।
ঘটনাস্থল মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের চালু না হওয়া চ্যানেল ‘এখন সময়’-এর অফিসের ছাদ। যে চ্যানেলটির গোটা সংস্থাটিই শুভাপ্রসন্নবাবুর কাছ থেকে কিনেছিলেন সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন। দেবকৃপা ব্যাপার প্রাইভেট লিমিটেডের এই চ্যানেলটির ঠিকানা সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে ডিএন-১৪, বিষ্ণু টাওয়ার। তার দশ তলায় ওই বৈদ্যুতিন চ্যানেলের অফিস ছিল। মঙ্গলবার এই অফিসেই হানা দিয়েছিলেন ইডির তদন্তকারীরা। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ওই ঠিকানায় চালু হয়েছে একটি সফট্ওয়্যার কোম্পানি। তদন্তকারীদের জানানো হয়, মাস চারেক আগে বিষ্ণু টাওয়ার কর্তৃপক্ষ ওই অফিসটি ভাড়া দিয়েছেন ওই সংস্থাটিকে।
তা হলে ‘এখন সময়’ চ্যানেলটির জিনিসপত্র কোথায় গেল? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে ওই বিষ্ণু টাওয়ার কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইডি অফিসারেরা। জানা যায়, ওই বিল্ডিং এর ছাদের একটি গুদামে ওই চ্যানেলের মালপত্র মজুত করা রয়েছে। সেই ঘরটির তালা খোলান তদন্তকারীরা। সেখান থেকে বেরিয়ে আসে বড় বড় ক্যামেরা, দামি কম্পিউটার। ইডির এক কর্তা জানান, ওই সব মালপত্রের জন্য প্রায় ৪-৬ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এক বছর ধরে তদন্ত করেও রাজ্য পুলিশের ‘সিট’ কেন এই সব সামগ্রীর হদিস পাননি সে প্রশ্নও তুলেছেন তদন্তকারীরা।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সমস্ত সরঞ্জাম এ দিন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা কেনার জন্য টাকা কে দিয়েছিলেন তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। কারণ, সুদীপ্ত ও শুভাপ্রসন্ন দু’জনেই দাবি করেছেন, টাকা তাঁর। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, ‘সিট’ সারদা নিয়ে তদন্ত শুরু করার পরেও কী করে ওই অফিস থেকে ওই সংস্থার সব মালপত্র বের করে গুদামে নিয়ে যাওয়া হল?