‘সৌজন্যে’ ছেদ, মেয়রের শপথ বয়কট বামেদের

রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরে বিরোধী আসনে গিয়ে এত দিন বামফ্রন্টের নীতি ছিল সৌজন্য এবং প্রথা মেনে চলা। চার বছরের মাথায় এ বারই প্রথম সেই নীতিতে ছেদ পড়তে চলেছে। কলকাতা পুরসভায় মেয়রের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করতে চলেছেন বাম কাউন্সিলরেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৫ ২২:০১
Share:

রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পরে বিরোধী আসনে গিয়ে এত দিন বামফ্রন্টের নীতি ছিল সৌজন্য এবং প্রথা মেনে চলা। চার বছরের মাথায় এ বারই প্রথম সেই নীতিতে ছেদ পড়তে চলেছে। কলকাতা পুরসভায় মেয়রের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করতে চলেছেন বাম কাউন্সিলরেরা। টাউন হলে শুক্রবার যখন কলকাতার মেয়র হিসাবে দ্বিতীয় বার শপথ নেবেন তৃণমূলের শোভন চট্টোপাধ্যায়, বামফ্রন্টের কাউন্সিলরেরা সে দিন পুর-ভবনের ফটকের বাইরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন।

Advertisement

কলকাতার পুরভোটে এ বার সব ওয়ার্ডে আদৌ জনমতের সঠিক প্রতিফলন ঘটেনি বলে বামফ্রন্টের অভিযোগ। লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে শহরে তৃণমূলের ভোট যে এক বছরে ১৩%-এরও বেশি বেড়েছে, তা সুষ্ঠু ভোটের ফল নয় বলেই তাদের দাবি। কলকাতার বেশ কিছু বুথে তৃণমূল প্রার্থীরাই প্রদত্ত ভোটের ৮৫-৯০% পেয়েছেন! বিরোধীদের জুটেছে নামমাত্র ভোট! বামেদের অভিযোগ, এ সবই হয়েছে সন্ত্রাস এবং ছাপ্পা ভোটের জেরে। এর প্রতিবাদেই এ দিন পুরভবনে বাম কাউন্সিলরেরা শপথ নিতে গিয়েছিলেন মুখে কালো কাপড় বেঁধে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবেই বুধবার আলিমুদ্দিনে বামফ্রন্টের বৈঠকে এ বার মেয়রের শপথ অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকের পরে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘মেয়রের শপথ অনুষ্ঠানে বাম কাউন্সিলরেরা থাকবেন না। তাঁরা পুরসভার সামনে সভা করে সাধারণ মানুষকে নিজেদের বক্তব্য জানাবেন।’’ প্রসঙ্গত, আম জনতার সঙ্গে জনসংযোগের অঙ্গ হিসাবে এ দিন ফ্রন্ট বৈঠকের পরেই বিমানবাবু, সূর্যকান্ত মিশ্র, শ্যামল চক্রবর্তী, রবীন দেবেরা ধর্মতলা চত্বরে অর্থ সংগ্রহে নেমেছিলেন নেপালের ভূমিকম্প দুর্গত মানুষের জন্য।

ফ্রন্ট বৈঠকে এ দিন আলোচনা হয়েছে, পুরভোটের পরেও নানা এলাকায় বাম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চলছে। সেই সঙ্গেই তাঁদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত মিথ্যা মামলা রুজু করা হচ্ছে বলে বাম নেতৃত্বের অভিযোগ। এই ধরনের সমস্ত মামলার বিবরণ একত্র করে তাঁরা রাজ্যপালের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন বিমানবাবু। রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ না হলে রাজ্য জুড়ে থানার সামনে বিক্ষোভ-অবস্থানের কর্মসূচি নেবে বামফ্রন্ট। রাজ্যে বর্তমান শাসক দলের কীর্তিকলাপ দেশের মানুষকে জানাতে প্রয়োজনে দিল্লিতেও অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে।

Advertisement

যে পাঁচটি পুরসভায় বামফ্রন্ট এ বার বোর্ড গঠনের জয়গায় রয়েছে, রীতি অনু্যায়ী সে সব ক্ষেত্রে জেলা বামফ্রন্টই ঠিক করবে চেয়ারম্যান কারা হবেন। বিমানবাবু এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘‘বোর্ড গঠনের জন্য কোনও ক্ষেত্রেই কোনও রকম অশুভ আঁতাঁত করা হবে না।’’ যে ১১টি পুরসভা ত্রিশঙ্কু, সেগুলিতে বামফ্রন্ট বিরোধী আসনে বসবে বলেও এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বামফ্রন্টের সব শরিকই এই সিদ্ধান্ত মেনে চলবে বলে বিমানবাবু জানিয়েছেন। কোনও প্রলোভনেই বাম কাউন্সিলরেরা পা দেবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন