সিটি মার্ট মেরামতিতে স্পেশাল অফিসার নিয়োগে নির্দেশ হাইকোর্টের

নিউ মার্কেট চত্বরের পুড়ে যাওয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোর্স ‘সিটি মার্ট’ মেরামতির জন্য স্পেশাল অফিসার ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সিটি মার্ট কর্তৃপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতেই বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ওই নির্দেশ দেন। তবে, একই সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশ, মেরামতি ও পুনর্নির্মাণ আইন মেনে করতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৫ ২১:৪০
Share:

আগুনে ভস্মীভূত সিটি মার্ট। —ফাইল চিত্র।

নিউ মার্কেট চত্বরের পুড়ে যাওয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোর্স ‘সিটি মার্ট’ মেরামতির জন্য স্পেশাল অফিসার ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সিটি মার্ট কর্তৃপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতেই বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ওই নির্দেশ দেন। তবে, একই সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশ, মেরামতি ও পুনর্নির্মাণ আইন মেনে করতে হবে।

Advertisement

গত ২৬ এপ্রিল আগুনে ভস্মীভূত হয় সিটি মার্ট। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই ডিপার্টমেন্টাল স্টোর্স কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় এফআইআর করে দমকল। রাজ্য দমকলের অধিকর্তা গৌরপ্রসাদ ঘোষ আগুন লাগার রাতেই জানান, সিটি মার্টে যথেষ্ট অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না। দমকলের বিশেষ দল তদন্ত করবে। দমকলমন্ত্রী জাভেদ খানও জানিয়েছিলেন, অনিয়ম থাকলে সিটি মার্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। পুলিশ অবশ্য অনিয়ম বা গাফিলতির কারণে এখনও পর্যন্ত সিটি মার্টের কাউকে গ্রেফতার করেনি। পুলিশের বক্তব্য, এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে যদি গাফিলতির প্রমাণ মেলে তবেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আদালতে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী অলোক ঘোষ এ দিন অভিযোগ করেন, পুড়ে যাওয়া ওই ডিপার্টমেন্টাল স্টোর্স মেরামতি বা পুনর্নির্মাণের জন্য কোনও আবেদন কলকাতা পুরসভার কাছে করা হয়নি। আদালতে কলকাতা পুরসভার আইনজীবী এ-ও জানান, পুর কর্তৃপক্ষের অনুমতি এ ক্ষেত্রে আবশ্যক। মেরামতি ও পুনর্নির্মাণের জন্য এখনই স্পেশাল অফিসার নিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে কি না সেই প্রশ্নও আদালতে তোলেন অলোকবাবু। হাইকোর্টের ওই নির্দেশের প্রেক্ষিতে পুর কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে পাল্টা মামলা করবেন বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

বহু পুরনো একটি সিনেমা হলকে ‘সিটি মার্ট’-এর চেহারা দেওয়া হয় বছর কয়েক আগে। গত ২৬ এপ্রিল, রবিবার বিধ্বংসী আগুন লাগে নিউ মার্কেট চত্বরের লিন্ডসে স্ট্রিটের চার তলা ওই ডিপার্টমেন্টাল স্টোর্সে। আগুন লাগার সময় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর্সটি খুলে গিয়েছিল। কিন্তু, যে সময় আগুন লাগে সেই সময় বেশি ক্রেতা হাজির হননি। আগুন লাগার পরেই অল্প কয়েক জন ক্রেতা ও সিটি মার্টের কর্মীরা তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসেন। সেই কারণেই আগুনে কেউ হতাহত হননি। আগুন নেভাতে গিয়ে দমকলের ১২ জন কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে তিনটি হাইড্রলিক মই-সহ ২৫টি ইঞ্জিন আনা হয়।

পুড়ে যাওয়া সিটি মার্টের মেরামতি ও পুনর্নির্মাণ চেয়ে চলতি সপ্তাহের গোড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়। মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, নিউ মার্কেট থানার পুলিশ মেরামতির কাজে বাধা দিচ্ছে। এ দিন মামলার শুনানির সময়েও সেই অভিযোগ করেন সিটি মার্টের আইনজীবী। কিন্তু সরকারি আইনজীবী জানান, পুলিশ ওই কাজে বাধা দেয়নি। বাধা দেওয়ার এক্তিয়ারও পুলিশের নেই। বাধা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

সিটি মার্টের আইনজীবী আদালতে জানান, পুড়ে যাওয়া বাড়িটির মেরামতির প্রয়োজন। সেই কাজে কর্তৃপক্ষ নিজেও কোনও দক্ষ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করতে পারেন। অথবা, আদালতও কাউকে নিযুক্ত করতে পারে। মেরামতি ও পুনর্নির্মাণ সঠিক ভাবে করা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য স্পেশাল অফিসারও নিযুক্ত করতে পারে আদালত। ওই আবেদনের ভিত্তিতেই হাইকোর্ট স্পেশাল অফিসার ও স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগে সম্মতি দিয়েছে বলে মনে করছেন হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন