মারধরের পর গণধর্ষণ, তার পরে খুন করে এক আইসিডিএস কর্মীর দেহ কড়িকাঠ থেকে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানার সুনিয়া গ্রামে। ওই মহিলার স্বামী সিপিএম করেন। অভিযোগ, এই ‘অপরাধ’-এ ঘরছাড়া ওই সিপিএম কর্মীর স্ত্রীর কাছ থেকে প্রচুর টাকা খেসারত হিসেবে চাওয়া হয়। কিন্তু, তিনি তা দিতে অপারগ হওয়ায় গণধর্ষণের পর খুন করা হয় তাঁকে। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কাঁথি থানায় ওই গৃহবধূর স্বামী ব্যোমকেশ গিরি এবং দেওর চন্দন গিরি অভিযোগ করেছেন, মারধরের পরে প্রকাশ্যে বিবস্ত্র করে তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়। পরে গণধর্ষিতা হন তিনি। শেষে ঘরের কড়িকাঠ থেকে উদ্ধার করা হয় ওই বধূর ঝুলন্ত দেহ। অভিযোগ, খুন করে কড়িকাঠের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে দীপালি গিরি (৪৩) নামে ওই বধূর দেহ। তিনি আইসিডিএস কর্মী ছিলেন। এই ঘটনায় ১২ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই ঘরছাড়া কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের সুনিয়া গ্রামের ব্যোমকেশ গিরি। এলাকায় তিনি সিপিএম সমর্থক হিসেবেই পরিচিত। অভিযোগ, তাঁর ভাই চন্দনকে গত ১৫ অগস্ট থেকে আটকে রেখে অত্যাচার করে এলাকার তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। রবিবার তাঁকে মারধর করতে করতেই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। চন্দনের বাড়ির পাশেই ব্যোমকেশের মাটির দোতলা বাড়ি। দুষ্কৃতীরা এই সময় দীপালিদেবীর কাছে টাকা চায় বলে অভিযোগ। কিন্তু দুষ্কৃতীদের দাবি মেনে ১২ লাখ টাকা দিতে অসম্মত হওয়ায় তাঁকে মারধর শুরু করে দুষ্কৃতীরা। মারতে মারতে তাঁকে বিবস্ত্র করা হয়। সেই অবস্থায় তাঁকে গ্রামে ঘুরিয়ে স্থানীয় জগদীশ মোড়ে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। এর পর এ দিন ভোরে বাড়ির দোতলার ঘর থেকে উদ্ধার হয় দীপালিদেবীর ঝুলন্ত দেহ।
প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এলাকার সিপিএম নেতা চক্রধর মেইকাপের অভিযোগ, “স্বামী সিপিএম করেন বলে তৃণমূলের হাতে গণধর্ষণের পর খুন হতে হল ওই গৃহবধূকে।” যদিও তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মামুদ হোসেন এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “একটি আত্মহত্যার ঘটনাকে রাজনৈতিক রং দিতেই এমন অভিযোগ তুলছে সিপিএম। এই ঘটনায় আমাদের কোনও কর্মী বা সমর্থক জড়িত নন।” দীপালিদেবীর দেহ উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।