সোমবার বারসতে সুদীপ ঘোষের তোলা ছবি।
সারদাকাণ্ড-সহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে তৃণমূল নেতৃত্বকে তুলোধোনা করলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক গৌতম দেব।
রবিবার কলকাতায় এসে ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের তখ্ত দখলের ডাক দিয়েছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। ২৪ ঘণ্টা পেরোল না, সোমবার একই পথে হাঁটল সিপিএম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের সমালোচনায় এ দিন বিকেলে বারাসতের দলীয় কার্য্যালয়ে সরব হন গৌতম দেব।
এ রাজ্যে ফের ক্ষমতা দখলের জন্য আরও বড় আন্দোলনের দিকে যাবে বামেরা, এ দিন সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আগামী ১১ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের সব জেলাতে আইন অমান্য কর্মসূচির পাশাপাশি তৃণমূল স্তরে দলীয় কর্মীরা প্রচার-সহ বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মানুষকে বোঝানোর কাজও করবেন বলে জানিয়েছেন গৌতমবাবু। এ ছাড়া, বুধবার রানি রাসমণি রোড থেকে মিছিল করবে বামেরা।
গত ৬ ডিসেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বামেদের সভা করার অনুমতি না মেলায় এ দিন পুলিশের সমালোচনা করেন গৌতমবাবু। অভিযোগ, তৃণমূল-সহ অন্যান্য দলকে সভা করার অনুমতি দেওয়া হলেও বামেদের তা দেওয়া হয়নি। গৌতমবাবু জানান, প্রয়োজনে এর বিহিত চেয়ে হাইকোর্টেও যাওয়া হতে পারে।
এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে সারদাকাণ্ড প্রসঙ্গে গৌতমবাবু বলেন, “এ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় সব জানেন।” সরকারকে সারদার তরফে যে অ্যাম্বুল্যান্সগুলি দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্সে ভরে টাকা যেত তৃণমূলের ঘরে। সরকার কেন সারদার কাছ থেকে অ্যাম্বুল্যান্সগুলি নিল, সেই প্রশ্নও এ দিন তোলেন তিনি। তৃণমূল সরকার জনগণের টাকার অপচয় করছে বলেও অভিযোগ করেন গৌতমবাবু।
এ দিন আইনি লড়াই নিয়ে মুকুল রায়কেও সরাসরি আক্রমণ করেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘মুকুল রায় ৩২ কোটি টাকা ক্যাশ নিয়ে বসেছিলেন। উপেন বিশ্বাস বাদে প্রায় সবাই সেই টাকার ভাগ নিয়েছে। এ কথা বলায় মুকুল আমার নামে মানহানি মামলা করেছে। আদালতে ১৯ বার আমি হাজিরা দিলেও মুকুল যায়নি। হয় ও জেলে যাবে না হয় আমি।’’ সঙ্গে সঙ্গে গৌতমবাবু আরও বলেন, ‘‘আমাকে ওরা জেলে পুরতে চেয়েছিল। পারেনি, আর পারবেও না। আর এক বছর আছে তৃণমূল। মমতা জেলে যাবে। মুকুলও যাবে।’’
সারদাকাণ্ড ছাড়াও এ দিন নির্বাচনে সন্ত্রাস নিয়েও সরব হন গৌতম দেব। বসিরহাট বিধানসভা কেন্দ্রে আসন্ন উপনির্বাচনে বহিরাগতদের দিয়ে তৃণমূল সন্ত্রাস করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে গৌতমবাবুর হুঁশিয়ারি, “তৃণমূল বহিরাগত ঢোকালে, আমরাও ঢোকাব।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, শুধু তৃণমূল নয়, ভোটের পরে এই কেন্দ্রে মুখ থুবড়ে পড়বে বিজেপি। যদিও এর কিছু পরেই ওই সিপিএম নেতার মন্তব্য, “তৃণমূল ইতিহাস হয়ে যাবে। বাম-বিজেপি-কংগ্রেস থাকবে। মানুষ তৃণমূলকে মনে রাখবে না।”