ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপি-র সভা নিয়ে অচলাবস্থা অব্যাহত। প্রত্যাশিত ভাবেই কলকাতা পুরসভা এবং দমকল বিজেপি-কে ওই সভার অনুমতি দেয়নি। বিচার চাইতে শুক্রবার ফের আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে বিজেপি। ওই সভা নিয়ে জট কাটাতে এই নিয়ে তিন বার কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছে তারা। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই দড়ি টানাটানির জেরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কটাক্ষ, “আমাদের দলের উত্থানে তৃণমূল ভীত! কিন্তু ৩০ নভেম্বর একটা সভায় এক জন বা কয়েক জন নেতা বক্তৃতা করবেন। তার জন্য রাজ্য সরকার এমন করছে যেন, ওই সভা হলে পর দিন ১ ডিসেম্বরই সরকারটা পড়ে যাবে!” যে রাজ্যে একটা সভার অনুমতি পেতে তিন বার আদালতে যেতে হয়, তার নাম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে উঠবে বলেও সরকারকে উপহাস করেন রাহুলবাবু।
বিজেপি-র দ্বিতীয় দফার মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, ওই জায়গায় সভা করতে হলে পুরসভা এবং দমকলের কিছু শর্ত মানতে হবে। বিজেপি জানিয়েছিল, তারা ওই সব শর্তই মানতে প্রস্তুত। আদালতের নির্দেশে বিজেপি পুরসভা এবং দমকলের কাছে প্রয়োজনীয় নথি পেশ করে। আদালতের নির্দেশেই বৃহস্পতিবার পুরসভা এবং দমকল চিঠি দিয়ে ওই সভা নিয়ে বিজেপি-কে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। বিজেপি-কে ওই সভার অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে দুই সংস্থাই।
আদালতের নির্দেশ ছিল, অনুমতি না দেওয়া হলে তার কারণ স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে। সে জন্য পুর এবং দমকল কর্তৃপক্ষ চিঠিতে অনুমতি না দেওয়ার সবিস্তার কারণ ব্যাখ্যাও করেছেন। পুরসভা নানা খুঁটিনাটি বিষয় উল্লেখ করে জানিয়েছে, বিজেপি-র দেওয়া তথ্য থেকে মঞ্চের নকশা স্পষ্ট হচ্ছে না। দমকলও লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইলেকট্রিশিয়ান এবং ইঞ্জিনিয়ারের শংসাপত্র না থাকা-সহ কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি তুলেছে। এই প্রেক্ষিতেই রাহুলবাবু বলেন, “পুরসভা এবং দমকল সভামঞ্চের নকশা করে দিক। আমরা সেটাই মানব। কোনও বিতর্কে যাব না। ফের আদালতে গিয়ে আমরা সে কথাই জানাব।” বিজেপি-র আশা, সভাপতির এই সৌজন্যের প্যাঁচে পুরসভা এবং দমকল দু’ পক্ষই বেকায়দায় পড়বে। রাহুলবাবু অবশ্য হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন, “রবিবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই হবে।” রাহুলবাবু জানান, এ দিন সকালেও অমিতের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই স্নায়ুর লড়াইয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন তিনি।