বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না লোকসভায়। বুধবার এমন অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী। শুধু তাই নয়, মোদীর নাম না করে তিনি এ দিন বলেন, “এখানে শুধু এক জনের কথাই শোনা হয়।” রাহুল বলেন, “সংসদে আমাদের কথা বলার অনুমতি মেলে না। আমরা আলোচনা চেয়েছিলাম। এই সরকারের কাছে আলোচনা গ্রহণযোগ্য নয়। এটা এখন সবাই অনুভব করছেন। আমরাও বুঝতে পারছি। ওদের দলের নেতারাও পারছেন।” সেই সময় লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
মুজফ্ফরনগরের পর সহারনপুর, দেশে বেড়ে চলা সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে এ দিন লোকসভায় আলোচনার দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস। এ বিষয়ে আগে থেকেই একটি মুলতুবি প্রস্তাব পেশ করেছিলেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। কিন্তু সে প্রস্তাব মানতে না চাওয়ায় রাহুলের নেতৃত্বে ওয়েলে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখালেন কংগ্রেস সাংসদেরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অন্য বিরোধী দলের সাংসদরাও। আলোচনার জন্য লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিল করে স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। সে চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে এ দিন দুপুর পর্যন্ত সভার কাজ মুলতুবি রাখার নির্দেশ দেন স্পিকার।
স্পিকারের পাশাপাশি সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুও এ দিন কংগ্রেসের এই দাবির বিরোধিতা করেন। সংসদে তিনি জানান, দেশের কোথাও কোনও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা নেই। কংগ্রেস সাংসদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “অহেতুক কোনও সমস্যা তৈরি করবেন না।”
রাহুল যখন অন্য সাংসদদের নিয়ে ওয়েলে নেমে স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘ভাল দিন কোথায় গেল, পালিয়ে গেল, পালিয়ে গেল’, তখন লোকসভায় নিজের আসনে বসেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। বিক্ষোভে উৎসাহ দিতে দেখা যায় তাঁকে। লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়কে ইশারা করে ওই বিক্ষোভে তাঁদের সামিল হতে বলেন সনিয়া। এর পরই তাঁর আসনের কাছে গিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ আলোচনা করতে দেখা যায় কল্যাণকে। নিজের আসনে তিনি ফিরে এলেও তৃণমূল সাংসদদের ওই বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যায়নি। এতেও রণে ভঙ্গ দেননি সনিয়া। লোকসভায় কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে তিনি তৃণমূল সাংসদদের কাছে পাঠান। যদিও ওয়েলে নেমে বিক্ষোভে তাঁরা কেউই যোগ দেননি।
বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীকেও এ দিন লোকসভায় যথেষ্ট সরব ভূমিকায় দেখা যায়। আলোচনার প্রস্তাব না মানায় স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “এই সভার আপনিই মা। অথচ আপনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন।”