মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদী
পর্বগুলো সব গুলিয়ে যাচ্ছে। অজ্ঞাতবাসের পর্যায়ে দ্রৌপদীর মর্যাদা হননের চেষ্টা করছিল কিচক, তখন তাঁকে রুখে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন মহাবলী ভীম। কিন্তু, সে তো মহাভারতের অন্য পর্যায়ে।
মহাভারতের সভা পর্বে দ্রৌপদীর যারপরনাই বস্ত্রহরণই কার্যত হয়েছিল। কোনও এক কৃষ্ণ এসে বস্ত্র জোগান দিয়ে গিয়েছিলেন, অতএব তখনকার মতো সম্মান রক্ষিত হয়েছিল, এর মধ্যে সামগ্রিকের মর্যাদা ছিল না। কোনও এক সহৃদয় ব্যক্তির মহানুভব অস্তিত্বে শৃঙ্খলা রক্ষা হবে, সমাজের কাঙ্ক্ষিত উপলব্ধিতে এটা কোনও দিনই ছিল না।
সামগ্রিক মর্যাদা পেল কয়েক সহস্র বছর পর আধুনিক মহাভারতের নতুন সভা পর্বে। চীরহরণের সেই পরিচিত দৃশ্যের পুনরাবৃত্তির প্রস্তুতি শুরু হয়। আরও এক বার সমাজ থর থর বুকে অপেক্ষা করে কলঙ্কের নতুন অধ্যায়ের জন্য। আধুনিক এই মহাভারতে উল্টে যায় হিসাবগুলো। গণতন্ত্রকে ধর্ষণের চেষ্টা সভা পর্বেই রুখে দিতে উদ্যোগী হন অন্য এক ভীম।
নসীম জৈদীর নেতৃত্বে আজ নির্বাচন কমিশন কলকাতায় এসে একের পর এক যে সিদ্ধান্তগুলো নিল, বলতে দ্বিধা নেই, ভারতীয় গণতন্ত্রকে এক বার সেলাম ঠুকতে ইচ্ছা করল। দোর্দণ্ডপ্রতাপ মুখ্যমন্ত্রীকে শোকজের নোটিস ধরানো অথবা বীরভূমের এসপিকে বদলি করে দেওয়া অথবা আরও কিছু অফিসারকে দাবার বোর্ড থেকে এক লহমায় ছিটকে দেওয়া, একসঙ্গে অনেকগুলো সিদ্ধান্তে আধুনিক মহাভারতটাকে নতুন করে লিখতে দেখলাম আমরা। শুরুতেই তাই বলেছিলাম, পর্বগুলো সব গুলিয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সব কিছু এ ভাবেই চলবে তো?