নারদ-কাণ্ডে তৃণমূলের অবস্থানটা তা হলে ঠিক কী দাঁড়াল? এই যে হুল, এই যে টাকা নেওয়ার অভিযোগ—এটা কি ষড়যন্ত্র, সমস্তটাই জাল? বোঝা যাচ্ছিল না শুরুর দিকে। প্রথম দিন কেলেঙ্কারির অভিযোগটা যখন উঠল, তখন দলের কেউ কিছু বলছিলেন না। বেনজির শৃঙ্খলার পরিচয় দিয়ে এক রা বেরোচ্ছিল, দল মুখ খুলতে বারণ করেছে, যা বলার দলই বলবে। তার পর মুকুল রায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েনরা সরাসরি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরোক্ষে বোঝাতে চাইলেন, এটা ষড়যন্ত্র। যাক তৃণমূলের শুভানুধ্যায়ীরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। চক্রান্ত এবং চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়।
কিন্তু আবার ভিন্ন সুর কেন? প্রথমে অপরূপা পোদ্দার পরে হাইকোর্টে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হঠাৎ ঘুষ নাকি অনুদান এই তত্ত্বটা আনছেন কেন? তা হলে কী দাঁড়াচ্ছে? টাকাটা পকেটে পুরেছেন নেতারা? অনুদান হিসাবে হয়ত বা? জাল ভিডিও নয়? চক্রান্ত নয়? আচ্ছা, ভেবে দেখার বিষয়। শুভানুধ্যায়ীরা স্বস্তির দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছনোর চেষ্টা করলেন। লোকসভা ভোটের আগে অনুদান নেওয়া যেতেই পারে।
কিন্তু প্রশ্ন জাগছে। অনুদান যদি হবে, রসিদগুলো কোথায় গেল? অনুদানের টাকা শালের তলায় ঢুকে যায় কেন? অনুদান না নিয়ে সংস্থার হিস্সা চান কেন শঙ্কুদেব? ফিরহাদ হাকিম ছোট অনুদানকে ‘ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ’ হিসাবে গণ্য করেন? তাই বলেন, সহচরকে টাকাটা দিতে হবে?
তার চেয়েও বড় প্রশ্ন। অনুদান তত্ত্বই যদি হয় কল্যাণবাবু, তাহলে জাল ভিডিও বললেন কেন নেতারা? বেসুরে বাজছে কেন সব?
নাকি তৃণমূল নেতৃত্বের তরফেও একটা বিধিসম্মত সতর্কীকরণ আবশ্যক ছিল? নারদ নিউজ নিয়ে অভিযোগের সত্যাসত্য বিচার করেননি তাঁরা!