Lok Sabha Election 2024

১০ টাকায় পেট ভরে খাওয়াতে চান শঙ্কর

উত্তরবঙ্গ থেকে চাকরির সুবাদে তিন দশক আগে দিল্লি এসেছিলেন শঙ্কর। গুরুগ্রামের সুশান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক পদ থেকে ছয় মাস হল অবসর নিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৪ ০৮:১৭
Share:

দিল্লিতে প্রচারে নির্দল প্রার্থী শঙ্করকুমার দে। — নিজস্ব চিত্র।

শরৎকাল এলেই দলবল জুটিয়ে দুর্গাপুজো করতে খামতি নেই দিল্লির বাঙালিদের। ছোট বড় মিলিয়ে দেড়শো-দু’শো পুজো হয় কেবল রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায়। ফি বছর সংখ্যা বাড়ছে পুজোর। কিন্তু ভোট মরসুমে আতস কাচ দিয়ে খুঁজলেও, চোখে পড়ে না এক জন বাঙালি প্রার্থীকে। ব্যতিক্রম ২০২৪। এ যাত্রায় অন্তত দক্ষিণ দিল্লি লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন এক বঙ্গসন্তান। শঙ্করকুমার দে নামে ওই ব্যক্তি লড়ছেন নির্দল হিসেবে, বাঁশি চিহ্নে। শঙ্করের দাবি, গোটা দিল্লিতে তিনিই একমাত্র বঙ্গসন্তান, যিনি এ যাত্রায় দিল্লিতে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন।

Advertisement

দিল্লিতে ভাষার ভিত্তিতে জনসংখ্যার বিশ্লেষণ করা গেলে বাঙালিদের স্থান তালিকার উপর দিকেই সম্ভবত থাকবে। কিন্তু তা হলে কী হবে গত প্রায় আড়াই দশকের বেশি সময় ধরে লোকসভা বা রাজ্য বিধানসভা এমনকি পুর প্রতিনিধি স্তরে কোনও বাঙালি প্রার্থী জেতা তো দূরে থাক, টিকিট পেয়েছেন কি না সন্দেহ! এ যাত্রায় সেই ছবিটি পাল্টাতে দক্ষিণ দিল্লি থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গত তিন দশক ধরে রাজধানীর বাসিন্দা, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারিক শঙ্কর দে।

উত্তরবঙ্গ থেকে চাকরির সুবাদে তিন দশক আগে দিল্লি এসেছিলেন শঙ্কর। গুরুগ্রামের সুশান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক পদ থেকে ছয় মাস হল অবসর নিয়েছেন তিনি। কর্মজীবনেই বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। সেই কাজই দিল্লির মেহরৌলির বাসিন্দা শঙ্করকে প্রেরণা দেয় ভোটে দাঁড়াতে। শঙ্কর বলেন, “বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আমি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি নিচু তলার মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য কেউ কাজ করে না। তাই আমার এগিয়ে আসা। আমার ইস্তাহারে তাই সবার আগে গরিবদের জন্য খাদ্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে ১০ টাকায় ভরপেট খেতে পারবেন গরিবেরা। পাশাপাশি বেকারত্ব এই মুহূর্তে দেশের সব চেয়ে বড় সমস্যা। তাই প্রতি তিন মাস অন্তর নিজের এলাকায় চাকরি মেলা আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।” জিতুন বা হেরে যান, লোকসভা নির্বাচনের পরে দশ টাকায় মানুষকে খাওয়ানোর উদ্যোগ শুরু করার কথা ভেবে রেখেছেন শঙ্কর।

Advertisement

গত দু’টি লোকসভাতেই দক্ষিণ দিল্লি কেন্দ্রে বিজেপি জেতায়, অন্য প্রার্থীদের চেয়ে ধারে-ভারে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির রামবীর বিধুড়ি। শঙ্কর নিজেও একাধিক হিন্দু সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তিনি দাঁড়ানোয় হিন্দু ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না নিজেকে ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে মনে করা শঙ্কর। তাঁর কথায়, “বাঙালি তো বটেই, অবাঙালি হিন্দু সমাজের কাছেও প্রচারে গিয়ে সাড়া পাচ্ছি। বহু মুসলিম সংগঠন, মসজিদের ইমাম নির্দল বলে আমাকে সমর্থন করতে এগিয়ে এসেছেন। সেটাই পাওনা।”

লড়াই যে অসম, তা মেনে নিচ্ছেন শঙ্কর। তাঁর কথায়, “লড়াইটা আসল। দেখা যাক কী ফলাফল হয়। হতে পারে সেই ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী দিনে আরও ভাল প্ল্যাটফর্ম পাওয়া সম্ভব হবে। যেখান থেকে মানুষের জন্য কিছু করা সম্ভব হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন