‘লিড’ কমলে ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি
Lok Sabha Election 2024

লক্ষ্মীর ভান্ডার: প্রচারের নির্দেশ অভিষেকের

রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ভাতার পরিমান ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা এবং ১০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করা হয়েছে। বীরভূম জেলায় বর্তমানে এই প্রকল্পের উপভোক্তা ৮ লক্ষ ৩৮ হাজারেরও বেশি।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

তারাপীঠ শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৯
Share:

সংগঠন নিয়ে বৈঠকের পরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারাপীঠে বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

সদ্য রাজ্য বাজেটে বেড়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আর্থিক অনুদান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এপ্রিল থেকেই বর্ধিত ভাতা মিলবে। লোকসভা নির্বাচনে শহর থেকে গ্রামে, এই নিয়ে প্রচার করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রকল্পকে সামনে রেখে দলের নেতা-কর্মীদের প্রচারে ঝাঁপানোর নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

বুধবার তারাপীঠের একটি লজে বীরভূম জেলার দুই লোকসভা কেন্দ্রের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিটির সদস্য এবং দলের আরও নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন অভিষেক। বৈঠকে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলি নিয়ে ভোটের প্রচারে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন অভিষেক।

তিনি সবচেয়ে বেশি জোর দেন লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের উপরে। তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, নেতা-কর্মীদের এই প্রকল্পের কথা প্রতিটি বুথ ধরে সেই এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করতে বলেছেন তিনি। অভিষেক বৈঠকে জানান, রাজ্যে পুরুষ ও মহিলা ভোটারের অনুপাত প্রায় সমান। সে ক্ষেত্রে লক্ষ্মীর ভান্ডার মোট ভোটারদের অন্তত ৫০ শতাংশ পেয়েছেন। তালিকা বানিয়ে প্রত্যেক উপভোক্তার বাড়িতে চার থেকে পাঁচ বার করে যাওয়ার নির্দেশ দেন অভিষেক।

Advertisement

প্রসঙ্গত, রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ভাতার পরিমান ৫০০ টাকা বাড়িয়ে ১০০০ টাকা এবং ১০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা করা হয়েছে। বীরভূম জেলায় বর্তমানে এই প্রকল্পের উপভোক্তা ৮ লক্ষ ৩৮ হাজারেরও বেশি। ইতিমধ্যেই উপভোক্তাদের নিয়ে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার সম্মেলন’ বিভিন্ন পঞ্চায়েতে হয়ে গিয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টচার্যও সমস্ত জেলার সভানেত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে প্রচারের নির্দেশ দেন। এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জেলায় এসে ওই প্রকল্প নিয়েই প্রচারে জোর দিতে বললেন।

সূত্রের খবর, বুধবার অভিষেক জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকের সময় দুই লোকসভা আসনের প্রার্থী শতাব্দী রায় ও অসিত মাল এবং কোর কমিটি থেকে অপসারিত জেলা সভাধিপতি কাজল শেখকে বৈঠকে ডেকে নেন। বৈঠকে সংগঠন-সহ কিছু বিষয়ে কাজল শেখের মতামতও নেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, কর্মী বৈঠকে শতাব্দী জেলার পুর-শহরগুলিতে তৃণমূলের পিছিয়ে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এবং তার পরেই আলোচনার ঝাঁঝ বেড়ে যায়। শতাব্দী অভিষেককে জানান, পুর-নির্বাচনে তৃণমূল জয় পেলেও লোকসভায় মানুষ ভোট দিচ্ছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

জানা গিয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি শহরের টাউন সভাপতি এবং পুরপ্রধানদের এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন। পুরপ্রধান, উপ- পুরপ্রধানদের প্রতি তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘লিড’ কম হলে দু’মাসের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি দলের মধ্যে কোনও রকম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রেয়াত করা যাবে না বলেও নেতা-কর্মীদের বার্তা দেন অভিষেক। সব রকম বিরোধ ভুলে ভোটের সময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট করার নির্দেশ দেন।
শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে যিনি বীরভূমে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন, সেই দেবাশিস ধরের বিরুদ্ধে প্রচারে শীতলখুচি প্রসঙ্গ তোলার নির্দেশও দেন অভিষেক।

সূত্রের খবর, ভোটের ফল খারাপ হলে প্রত্যেককে জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কোনও অজুহাত শোনা হবে না। অভিষেক বলেন, ‘‘যাঁর যেখানে দায়িত্ব, সেই এলাকার দায়িত্ব পালন করুন। অন্য ব্লকে নাক গলাবেন না।’’ বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের কাছে অবশ্য অভিষেক দাবি করেন, দলের মধ্যে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। পরে বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যদি কিছু থেকে থাকে, তার জন্যই আজকের বৈঠক।’’

দলীয় সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, ইডি-সিবিআই বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় এজেন্সি যদি তদন্তের নামে দলের নেতাদের ডাকে, তা হলে তাঁদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য দলের পক্ষ থেকে ‘লিগ্যাল সেল’ খোলা হয়েছে। তারাই যা করার করবে। কাউকে ভোটের সময় ডাক দিলে হাজিরা দিতে হবে না বলেও ‌অভিষেক দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, সূত্রের খবর এমনটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন